বস্ত্রপণ্য রপ্তানি করে ভারত ২০৪৭ সাল নাগাদ ৬০০ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। একইসঙ্গে বস্ত্রশিল্পের জন্য একটি রোডম্যাপ বা পথনকশা তৈরি করেছে ভারতের কর্তৃপক্ষ। দেশটির লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে এটিকে ৩৫ হাজার কোটি ডলারের শিল্পে উন্নীত করা। এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে বস্ত্রশিল্পে সাড়ে চার কোটি থেকে ছয় কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করাও ভারত সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন বস্ত্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং। ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতের বস্ত্রশিল্পের বর্তমান আকার ১৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ সরকারের লক্ষ্য আগামী ছয় বছরের মধ্যেই বস্ত্রশিল্পের আকার দ্বিগুণেরও বেশি বড় করা। এ সময়ের মধ্যে ভারত বস্ত্র ও পোশাক খাতের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়। এ ছাড়া বস্ত্রপণ্য রপ্তানি করে দেশটি ২০৪৭ সাল নাগাদ ৬০০ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বলে জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
শুক্রবারে বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বস্ত্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, যে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে, তার আওতায় কয়েক লাখ কোটি রুপি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে সাতটি পিএম মেগা ইন্টিগ্রেটেড টেক্সটাইল রিজিয়ন অ্যান্ড অ্যাপারেল পার্কের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেগুলো পুরোপুরি কার্যকর হলে ৭০ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগ আসবে।
মন্ত্রী বলেন, ভারতের বস্ত্র খাতকে একটি ৩৫ হাজার কোটি ডলারের শিল্পে রূপান্তরিত করতে হলে সব ধরনের কাপড়ের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম সুতা যেমন সিনথেটিক, অথবা রেয়ন ও প্রাকৃতিক সুতার দিকেও নজর ফেরাতে হবে। তিনি জানান, বর্তমানে ৩৫০টি গ্লোবাল ব্র্যান্ড ভারতে থেকে তৈরি পোশাক সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় পোশাকের বিশাল বাজার রয়েছে।
গত ২০২৩–২৪ (এপ্রিল–মার্চ) অর্থবছরে ভারতে পোশাক রপ্তানি ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে ৩৪ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। এক বছর আগে এ খাতে ভারতের রপ্তানি ছিল ৩৫ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। এই পটভূমিতে ভারত ২০৩০ সাল নাগাদ পোশাক রপ্তানি থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে।
বস্ত্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, ভারতের বস্ত্র খাতেও ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ কিংবা ভিয়েতনাম ভারতের বস্ত্রশিল্পের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে না। তাঁর ভাষায়, ‘আমি এটা বলতে চাই, বাংলাদেশ কিংবা ভিয়েতনাম কোনোটিই আমার জন্য চ্যালেঞ্জ নয়।’
ভারতের মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বস্ত্রশিল্পের জন্যও আমরা মেক ইন ইন্ডিয়া কার্যক্রম চালু করবো। প্রতিবছর আমাদের দেশের জনসংখ্যা অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি বাড়ছে। গত ১০ বছরে ভারতে ২১ কোটি মানুষের জন্ম হয়েছে।’
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন