মিসের টানা পাঁচ মাস নিম্নমুখী থাকার পর আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থা সেন্ট্রাল এজেন্সি ফর পাবলিক মোবিলাইজেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যমতে, গত মাসে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ২৬ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছায়, যা জুলাইয়ে ছিল ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
সম্প্রতি জ্বালানি তেলে ভর্তুকি কমিয়েছে মিসরের সরকার। এতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। মাসিক হিসাবে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে ভোক্তা মূল্য সূচক ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে, যা গত ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। ভোক্তা মূল্য সূচক বাড়া সত্ত্বেও বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন মুদ্রাস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
বিনিয়োগ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নাঈম হোল্ডিংসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম থাকায় চলতি বছরের একই সময়ে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশের পূর্বাভাস দেয়া হয়। যদিও এ সময়ে ভোক্তা মূল্য সূচক ১ দশমিক ২৪ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। এদিকে আরেক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইএফজি হার্মিস আগস্টের জন্য ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
পরিবহন খাতের খরচ বৃদ্ধি মুল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেছনে অবদান রেখেছে। মাসিক হিসাবে আগস্টে খরচ বেড়েছে ১০ দশমিক ৭ এবং বার্ষিক হিসাবে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ। জুলাইয়ে সরকার ডিজেলসহ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়। সে সময় বিশ্লেষকরা পরিবহন খরচ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সিদ্ধান্ত এমন সময় নেয়া হয়, যখন দেশটির অব্যাহত ঋণ কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পর্যালোচনা করা হয়।
খাদ্য ও পানীয়ের দাম জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে, যা বছরভিত্তিক হিসাবে রেকর্ড ২৮ দশমিক ১ শতাংশ। মাসিক হিসাবে পোশাক ও জুতার ম্ল্যূ ১ দশমিক ১ শতাংশ, আবাসন ও ইউটিলিটি দশমিক ৭, আসবাবপত্র ও গৃহস্থালি সরঞ্জামে ১ দশমিক ৭ এবং স্বাস্থ্যসেবার মূল্য ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
সম্প্রতি সরকারের ভর্তুকি কমানোর কারণে হঠাৎ মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, জ্বালানি তেলের দাম ১৫ শতাংশ পর্যন্ত এবং বিদ্যুতের খরচ ১৫-৪০ শতাংশ বেড়েছে।
আর্থিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ রাগাব জানান, মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বগতির কারণে মিসরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ অক্টোবরের পরবর্তী বৈঠকে সুদহার সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে টানা চতুর্থবার সুদহার বাড়ানো হবে। অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ পূর্বাভাস দিয়েছেন দেশটির সুদহার চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা আগামী বছরের শুরু দিকে কমবে। (খবরঃ দ্য ন্যাশনাল)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন