অর্থনীতি ডেস্ক: পতন পেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে শেষ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই সূচক বাড়লো। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও ১২টি প্রতিষ্ঠান বড় দাপট দেখিয়েছে। লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এই ১২ প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। অন্যদিকে দিনের সর্বোচ্চ দামে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বিপুল পরিমাণে ক্রয়ের আদেশ আসে। এই ১২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট নিটিং, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, ফার কেমিক্যাল, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, প্রিমিয়ার ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, মিথুন নিটিং, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সাইফ পাওয়ার এবং কোহিনুর কেমিক্যাল। এই ১২ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখানোর পাশাপাশি আরও অর্ধশাতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের ওপর বেড়েছে। ফলে বড় উত্থান হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের। সেই সঙ্গে ডিএসই এবং সিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কর্যদিবসের মধ্যে তিন কর্যদিবসেই শেয়ারবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এতে এক সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বাড়ে ৬ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। আর ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স বাড়ে ৯৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট। এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়ে। ফলে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৫৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের ওপরে। এরমধ্যে ৫৯টির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। আর ১২টির দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব, ততটাই বেড়েছে। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ৭৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৯২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে আটশ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১০৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪১ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৩৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩১ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, মালেক স্পিনিং, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আইটি কনসালটেন্ট, স্যালভো কেমিক্যাল, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড এবং বেস্ট হোল্ডিং। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭০টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন