যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের অভাবে বেশ কয়েকটি ক্লিনটেক (পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবসা) স্টার্টআপ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিছুদিন আগেও সফটব্যাংক বা অ্যামাজনের মতো বড় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে লাখ লাখ ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছিল কোম্পানিগুলো। এখন উচ্চ সুদহার ও কর সুবিধা পেতে দেরির কারণে অর্থাভাবে পড়েছে ব্যবসায়িক উদ্যোগ। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভূমিকা পালন করা বাইডেন প্রশাসনের দ্বারা প্রশংসিত কিছু কোম্পানিও রয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সুদহার অনেক বেশি। ফলে ব্যবসায়ীরা স্টার্টআপে বিনিয়োগ করতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কর সুবিধা পেয়ে আসছে এ ধরনের উদ্যোগ। মওকুফকৃত করের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে মূলধন বাড়ানোর সুযোগ থাকে। সম্প্রতি এ সুবিধা পেতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থাভাবে পড়েছে স্টার্টআপগুলো। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে বাইডেন প্রশাসনের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যপূরণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ব্যাটারি স্টার্টআপ মক্সিওন পাওয়ার অ্যামাজনের ক্লাইমেট প্লেজ ফান্ড থেকে তহবিল সংগ্রহ করেছিল। গত মাসে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করেছেন এর উদ্যোক্তারা। একইভাবে ফ্রান্সের জ্বালানি তেল কোম্পানি টোটালের নিয়ন্ত্রণাধীন মার্কিন সোলার কোম্পানি সানপাওয়ারও দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করেছে।
মক্সিওন ও সানপাওয়ার ছাড়াও ৫ কোটি ডলারের বেশি ঋণের বোঝা নিয়ে আরো অন্তত দুটি বড় নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানি চলতি বছর নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। এটি ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে বেশি। বিল গেটসের ভেঞ্চার ফান্ড থেকে অর্থ সংগ্রহ করা ব্যাটারি কোম্পানি অ্যাম্ব্রিও নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। এছাড়া কাঠের পিলেট সরবরাহকারী এনভিভাও একই পথে হেঁটেছে।
সৌরবিদ্যুৎ ও ব্যাটারি সরবরাহকারী সোয়েল এনার্জি ২০২২ সালে সফটব্যাংকের ভিশন ফান্ড, অ্যারেস ম্যানেজমেন্টসহ অন্যদের কাছ থেকে ১২ কোটি ডলারের বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছিল। চলতি মাসে বর্তমান রূপে ব্যবসা অব্যাহত না রাখার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। সোয়েলের সিইও সুলেমান খান জানান, তাদের সোলার ও ব্যাটারি সিস্টেমের নেটওয়ার্ক চালু থাকবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কার্যক্রম নিশ্চিত করতে তারা বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাটারি নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করবেন।
মোয়েলিসের ক্লিনটেক গ্রুপের উপপ্রধান আরাশ নাজহাদ জানান, ছোট উদ্যোগগুলোর প্রাথমিক পর্যায় পার হয়ে আরো বড় পরিসরে ব্যবসা চালাতে বিপুল অংকের বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ কোম্পানিগুলো তা পেতে ব্যর্থ হয়েছে। কেননা জলবায়ু প্রযুক্তি ও জ্বালানি রূপান্তর খাতে বড় উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের পরিমাণ অনেক বেশি।
তবে কিছু ক্লিনটেক ব্যবসা এখনো তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম হচ্ছে। সিলিকনভিত্তিক ব্যাটারি ডেভেলপার সিলা ন্যানোটেকনোলজিস জুনে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। কার্বন নিঃসরণের জন্য ফিল্টার ও কার্বন ক্যাপচার মেশিন উৎপাদন করে সেন্ট। গত আগস্টে কানাডা গ্রোথ থেকে ১০ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে কোম্পানিটি। (খবরঃ ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন