ধনী দেশগুলোয় আবাসন ব্যয় বেড়েছে – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩ অপরাহ্ন

ধনী দেশগুলোয় আবাসন ব্যয় বেড়েছে

  • ০৮/০৯/২০২৪

ধনী দেশগুলোয় আবাসন ব্যয় অনেকটা বেড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে এ নিয়ে অনেক দেশের মানুষের অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। দেশগুলোয় স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ব্যয়ের চেয়ে আবাসন ব্যয় এসব দেশের মানুষের মাথাব্যথার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অরগানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টভুক্ত (ওইসিডি) দেশগুলোয় আবাসন নিয়ে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, অর্ধেক মানুষ সাধ্যের মধ্যে আবাসন না থাকার কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ বৃদ্ধি করায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে অসন্তোষের মাত্রা ঠিক এতটা ছিল না।
জরিপে দেখা গেছে, উচ্চ সুদের কারণে ইউরোপে অন্যান্য সম্পদের দাম কমলেও আবাসনের দাম কভিড-১৯ মহামারির আগের তুলনায় বেড়েছে। এমনকি উচ্চ সুদের বিষয়টি আমলে নেয়া না হলেও আবাসন ব্যয়ের বিষয়টি সত্য। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদ বাড়ার পর আবাসনের দাম বেড়েছে। গ্যালাপের জরিপে অংশ নেয়া ৬০ শতাংশ মানুষ বাড়ির দাম সাধ্যের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমনিতেই পণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে মানুষের ব্যয়যোগ্য আয় কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাড়িভাড়া। গবেষকরা বলছেন, সাধ্যের মধ্যে থাকা বাড়ির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এর আংশিক কারণ হলো, নতুন বাড়ির নির্মাণ কমে যাওয়া। ওইসিডির সামাজিক নীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ উইলেম অ্যাডেমা বলেন, প্রকৃতঅর্থে বাড়ির নির্মাণ কমে গেছে। নির্মাণ বা আবাসন কোম্পানিগুলো ধনী বা সচ্ছল পরিবারগুলোকে লক্ষ্য করে প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু নিম্নআয়ের মানুষের কথা তারা খুব একটা ভাবে না। সে কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু উইশার্ট বলেন, মানুষের আয়ের গতি-প্রকৃতি আবাসনের সরবরাহের চেয়ে দ্রুতগতিতে বদলে যেতে পারে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে আবাসনজনিত অসন্তোষ বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আগামী নভেম্বরে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জো বাইডেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর সেখানে আবাসনের গড়পড়তা দাম ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রথমবার বাড়ি কিনছেন, ২০২১ সালের পর সেই শ্রেণির ক্রেতাদের গৃহঋণের কিস্তি ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই ক্রেতাদের গৃহঋণের কিস্তি ছিল ২ হাজার ডলার; এখন তা ৩ হাজার ৯৬ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
ওইসিডিভুক্ত ৩৭টি ধনী দেশের ৩৭ হাজার মানুষের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করেছে গ্যালাপ। জরিপে আরও দেখা গেছে, ৩০ বছরের কম বয়সী এবং ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে আবাসন নিয়ে অসন্তোষ সবচেয়ে বেশি। এই বয়সের মানুষেরা সাধারণ নিজের জন্য কিছু করতে চান; সে কারণে তাদের মধ্যে এই অসন্তোষ। দেখা গেছে, ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ৪৪ শতাংশ আবাসন নিয়ে সন্তুষ্ট নন; কিন্তু ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে তা ৫৫ শতাংশ এবং ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের ৫৬ শতাংশের মধ্যে এই প্রবণতা রয়েছে। ইংল্যান্ডের সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, সে দেশে বাড়ির দাম এখন মানুষের বার্ষিক গড় মজুরির ৮ গুণ। ১৯৯৭ সালের তুলনায় এই অনুপাত দ্বিগুণের বেশি। ইংল্যান্ডে এখন সাময়িকভাবে কোনো বাড়িতে থাকা মানুষের সংখ্যা রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।
অন্যান্য ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোর ৩০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও গণপরিবহন নিয়ে অসন্তুষ্ট। জীবনযাত্রার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা মানুষের হার ২০২৩ সালে কিঞ্চিৎ বেড়ে ২৪ থেকে ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। গ্যালাপের জরিপে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে জার্মানিতে আবাসন নিয়ে অসন্তুষ্ট মানুষের সংখ্যা ছিল ৪২ শতাংশ; এবার তা রেকর্ড ৪৬ শতাংশে উঠে গেছে। ২০১২ সালের তুলনায় এই হার দ্বিগুণ। চলতি বছর স্পেনে এই শ্রেণির মানুষের হার ৬২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
Source : The Financial Times

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us