ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় সম্প্রতি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রা এ অঞ্চলের দেশগুলোর শস্য উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। এ অবস্থায় দেশগুলোয় চলতি বছরের শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস সংশোধন করা হয়েছে। সোমবার মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ক্রপ মনিটরিং সার্ভিস এমএআরসি।
ইইউভুক্ত দেশ দক্ষিণ হাঙ্গেরি, সার্বিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অংশে ১৯৯১-২০২৩ সালের দীর্ঘমেয়াদি গড়ের তুলনায় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা বেড়েছে। এছাড়া ইউরোপের অনেক অংশে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এমএআরসি জানায়, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও গ্রিসের মতো দেশগুলোয় গ্রীষ্মকালীন ফসল ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পরিষেবা সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর ইইউভুক্ত দেশগুলোয় হেক্টরপ্রতি ভুট্টার গড় ফলন হতে পারে ৭ দশমিক শূন্য ৩ টন, যা গত বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ কম। জুলাইয়ে দেয়া পূর্বাভাসে এমএআরসি ইইউভুক্ত দেশগুলোয় হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ২৪ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে বলে জানিয়েছিল।
ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম ভুট্টা উৎপাদনকারী দেশ রোমানিয়া। দেশটির বেশির ভাগ অংশে বর্তমানে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ২-৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, রোমানিয়ায় চলতি বছর হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ৮৩ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ কম। জুলাইয়ে দেয়া পূর্বাভাসে দেশটিতে ৪ দশমিক শূন্য ৮ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। এছাড়া হাঙ্গেরিতে ভুট্টার গড় ফলন হতে পারে হেক্টরপ্রতি ৬ দশমিক ৪৬ টন, যা গত বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ কম। এর আগে দেশটিতে হেক্টরপ্রতি ভুট্টার গড় ফলন ৬ দশমিক ৭৭ টন হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল।
ইইউভুক্ত দেশগুলোয় সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন হয়ে থাকে। এমএআরসি জানায়, চলতি বছর এ অঞ্চলে গমের উৎপাদন হতে পারে হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক ৬৮ টন, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম। গত মাসে ইইউভুক্ত দেশে হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক ৮৭ টন গম উৎপাদন হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল।
এছাড়া চলতি বছর শীত ও বসন্তে এ দেশগুলোয় যব উৎপাদন হতে পারে হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক শূন্য ১ টন, জুলাইয়ে দেয়া পূর্বাভাসে যা ছিল হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক শূন্য ৯ টন। তবে এ পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশটিতে যবের উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ বাড়তে পারে।
এমএআরসি জানায়, ‘শীতকালীন খাদ্যশস্যের (বিশেষ করে নরম গম ও শীতকালীন যব) বেশির ভাগই প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পূর্বাভাসে এমএআরসি আরো জানায়, তেলবীজের মধ্যে ইইউভুক্ত দেশগুলোয় সরিষার ফলন কমে হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক শূন্য ৭ টনে নেমে যেতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ কম, জুলাইয়ে দেয়া পূর্বাভাসে যা ছিল হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ১০ টন। এছাড়া এ সময় দেশগুলোয় সুগারবিটের ফলন পৌঁছতে পারে হেক্টরপ্রতি ৭৩ দশমিক ৪ টনে। (খবর: রয়টার্স)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন