স্মার্ট অডিও ডিভাইস হলো অতিরিক্ত ফিচারসংশ্লিষ্ট হেডফোন বা ইয়ারবাডের মতো গ্যাজেট, যা ফোনের সঙ্গে ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযোগ করা হয়। এসব ডিভাইসে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট (যেমন সিরি), নয়েজ ক্যান্সেলেশন ও সহজে ব্যবহারের জন্য টাচ কন্ট্রোলের মতো বৈশিষ্ট্য থাকে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্ট পারসোনাল অডিও ডিভাইস বাজারের আকার বেড়েছে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময় ডিভাইসগুলো বিক্রি হয়েছে ১০ কোটি ৬০ লাখ ইউনিট, যা দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এ প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে ওপেন-ফর্ম ইয়ারফোন, যার মধ্যে রয়েছে ট্রু ওয়্যারলেস স্টেরিও (টিডব্লিউএস) ইয়ারফোন ও ওয়্যালেস হেডফোন। সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অডিও ডিভাইসের বাজার অর্থাৎ সামগ্রিক বিক্রয় ও চাহিদা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে সাড়ে ১০ শতাংশের বেশি। এসব ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে ওয়্যারলেস ইয়ারবাড ও স্মার্ট হেডফোন। প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্মার্ট ইয়ারফোনগুলোর ডিজাইন এমনভাবে করা, যা আরামদায়ক হয় ও পরিহিত অবস্থায় পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝতেও সহায়ক। শব্দের গুণমান ও বিভিন্ন সুবিধা এসব উন্নত অডিও পণ্যের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে টিডব্লিউএস ইয়ারবাড ও ওয়্যারলেস হেডফোন উভয়ই স্মার্ট অডিও ডিভাইসের বাজার বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। এ সময় একদিকে ডিভাইসগুলোর বিক্রি বেড়েছে ও অন্যদিকে এগুলো বাজারের সামগ্রিক বৃদ্ধিকে চালিত করতে সহায়তা করেছে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে টিডব্লিউএস ইয়ারফোন বিক্রি হয়েছে ৭ কোটি ৭০ লাখ ইউনিট এবং ওয়্যারলেস হেডফোন বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট। এ সময় ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে গ্লোবাল স্মার্ট পার্সোনাল অডিও বাজারে শীর্ষে রয়েছে টিডব্লিউএস ডিভাইস। যদিও একসময় টিডব্লিউএসের বিক্রি কিছুটা কমে গিয়েছিল। এরপর বড় কোম্পানিগুলো ৫০ ডলারের (প্রায় ৬ হাজার টাকা) কম দামের মডেলগুলো বাজারে আনতে শুরু করে। কৌশলটি ডিভাইসের চাহিদা বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ক্যানালিসের রিসার্চ ম্যানেজার সিনথিয়া চেন বলেন, ‘পণ্যগুলোকে (স্মার্ট অডিও ডিভাইস) ব্যতিক্রম ও ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে কোম্পানিগুলো নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করছে। কারণ বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ছে ও পণ্যের দামও কমছে। যেমন হুয়াওয়ে লিপস্টিক টু ইয়ারবাড নারীদের আকৃষ্ট করার জন্য লিপস্টিকের মতো ডিজাইন করা হয়েছে, আবার জেবিএলের ইয়ারফোনে নোটিফিকেশন চেক করার জন্য ডিসপ্লে রয়েছে। কিছু কোম্পানি, যেমন নাথিং ও আইফ্লাইটেক তাদের পণ্যগুলোয় এআই ফিচার যুক্ত করছে।’
প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রান্তিকে ক্রেতারা টিডব্লিউএস ও ওয়্যারলেস মডেলের ক্ষেত্রে ওপেন-ফর্ম ইয়ারফোন বেশি পছন্দ করছে। যদিও এ ইয়ারফোনগুলো তৈরি করা প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং, তবে সাশ্রয়ী মূল্য হওয়ায় এগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। শকসের মতো ব্র্যান্ডগুলো খেলাধুলাভিত্তিক ফিচারে ফোকাস করেছে, অন্যদিকে হুয়াওয়ে দিচ্ছে স্টাইলিশ ও আরামদায়ক ডিজাইন। জুনে শেষ হওয়া প্রান্তিকে উভয় ব্র্যান্ডেরই ওপেন-ফর্ম ইয়ারফোন সেগমেন্টের বাজারে ১০ শতাংশের বেশি বাজার হিস্যা রয়েছে।
ওপেন-ফর্ম ইয়ারফোন ওপেন-ব্যাক হেডফোন নামেও পরিচিত। এগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কানের কাপের মধ্য দিয়ে বাতাস ও শব্দ চলাচল করতে কোনো বাধা তৈরি করে না।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন