কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে লেখা, ছবি, ভিডিওসহ নানা কনটেন্ট তৈরির প্রযুক্তি হচ্ছে জেনারেটিভ এআই। সম্প্রতি চীনের আদালত জেনারেটিভ এআই নিয়ে কিছু রায় দিয়েছেন। হালনাগাদ প্রযুক্তি নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে বৈশ্বিক মানদণ্ড তৈরিতে এসব রায় অবদান রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনা আদালতের এসব রায়ে এ প্রযুক্তি নিয়ে দেশটির দৃষ্টিভঙ্গি কেমন তাও তুলে ধরা হয়েছে। একে বিশ্বব্যাপী এআইয়ের মানদণ্ড নির্ধারণের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।
চলতি বছরের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো এআই সম্পর্কিত একটি মামলা নিষ্পত্তি করেন আদালত। মামলায় কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে এআইয়ের মাধ্যমে কণ্ঠস্বর নকলের অভিযোগ এনেছিলেন এক কণ্ঠশিল্পী। আদালত অভিযোগের সত্যতা পেলে কোম্পানিগুলোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ লাখ ৫০ হাজার ইউয়ান বা ৩৫ হাজার ডলার প্রদানের নির্দেশ দেন। চীনের সিভিল কোডে আগেই নাগরিকের কণ্ঠ সুরক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা থাকলেও এটা ছিল প্রয়োগের প্রথম দৃষ্টান্ত।
শুধু চীনেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, এমন নয়। মার্কিন অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসনও অভিযোগ করেছিলেন, ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটির ভয়েস ফাংশনের কণ্ঠ তার সঙ্গে ‘অদ্ভুতভাবে’ মিলে যায়। কোম্পানিটি এরপর থেকে কণ্ঠটি ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়।
জাপানে অনুমতি ছাড়াই কণ্ঠশিল্পী ও গায়কদের ডিজিটাল সংস্করণ তৈরির বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি কণ্ঠের অধিকার নিয়ে বিতর্ক অবশিষ্ট রয়েছে।
এআই সম্পর্কিত আইনে বিশেষজ্ঞ জাপানের অ্যাটর্নি নাকাজাকি তাকাশি বলেন, ‘এ সম্পর্কিত আলোচনা ইউরোপে ঠিক কোন দিকে যাচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। তবে জাপানে কপিরাইট যোগ্যতার বিষয়টি কোনো কাজের ক্ষেত্রে ঠিক কী ধরনের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে।’
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) অনুসারে, বিশ্বজুড়ে এআই সম্পর্কিত এক হাজারেরও বেশি নিয়ম বা আইন রয়েছে। তবে বেশির ভাগই এখনো আলোচনা পর্যায় আছে। সেভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না।
চীনা আইনে পারদর্শী জাপানি আইনজীবী ওনোদেরা ইয়োশিফুমি বলেন, ‘অনেক দেশই চাচ্ছে এআইয়ের মানদণ্ড তৈরি করতে। তবে চীনের আদালত এরই মধ্যে যেসব রায় দিয়েছেন, তাতে এ বিষয়ে চীনা সরকারের যে তাগাদা আছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।’
এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে দেশটির সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এপ্রিলে প্রকাশিত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপ মতে, ২০২২ সালে দাখিল করা পেটেন্টের আবেদনগুলোর ৬১ দশমিক ১ শতাংশ হিস্যা পায় চীনা কোম্পানি ও সংস্থাগুলো। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হিস্যা ২০ দশমিক ৯ শতাংশ। এতে সন্দেহ নেই, চীন এক্ষেত্রে এগিয়ে। (খবর: নিক্কেই এশিয়া)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন