পাকিস্তানে ব্যবসা সীমিত করল টোটাল এনার্জিস – The Finance BD
 ঢাকা     বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন

পাকিস্তানে ব্যবসা সীমিত করল টোটাল এনার্জিস

  • ১৪/০৮/২০২৪

পাকিস্তান থেকে একের পর এক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পশ্চিমা বহুজাতিক কোম্পানি (এমএনসি)। কোনো কোনো কোম্পানি পুরো ব্যবসা বিক্রি করে দিয়েছে। আবার কার্যক্রম সীমিত করে কিছু কোম্পানি ব্যবসা বন্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে। সে তালিকায় যুক্ত হলো ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিস।
গত দুই বছরে টেলিনর ও শেল অয়েলসহ অন্তত নয়টি কোম্পানি পাকিস্তানে বিনিয়োগ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে নিয়েছে। এজন্য ব্যবসায় অতি নিয়ন্ত্রণ, মুনাফা স্থানান্তরে বাধা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
ইসলামাবাদভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক শহিদ মাইতলা বলেন, ‘ব্যবসায় উচ্চ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস, স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিকতার ওপর নির্ভর করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। এসবের অনুপস্থিতি থাকলে তাদের বাজার ছেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।’
সহযোগী কোম্পানি টোটাল পারকো পাকিস্তানের কাছে রয়েছে আট শতাধিক জ্বালানি স্টেশনের খুচরা নেটওয়ার্ক। এর ৫০ শতাংশ সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গুনভোর গ্রুপের কাছে বিক্রি করবে বলে জানিয়েছে টোটাল এনার্জিস। কোম্পানিটি আরো বলছে, ২ কোটি ৬৫ লাখ ডলারে অংশীদারত্ব বিক্রি করে ব্যবসার মূল কেন্দ্রগুলোর দিকে মনোযোগ দেবে।
ডিসেম্বরে টেলিনর গ্রুপ নিজেদের স্থানীয় ইউনিট পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির কাছে ৩৮ কোটি ৮০ লাখ ডলারে বিক্রির ঘোষণা দেয়। টেলিনর প্রায় দুই দশক ধরে পাকিস্তানে কাজ করছে এবং তাদের গ্রাহক ছিল সাড়ে চার কোটি।
আরেক হাই-প্রোফাইল কোম্পানি শেল অয়েল সৌদি আরবের কোম্পানি ওয়াফি এনার্জির কাছে ৭৭ দশমিক ৪২ শতাংশ ব্যবসা বিক্রির চুক্তিতে পৌঁছেছে। এছাড়া সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট ফাইজার ও সানোফি।
পাকিস্তানের অন্যতম অর্থনৈতিক সংকট হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসা। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ঋণ চেয়ে আসছে দেশটি। একই সময়ে মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কঠোর করায় বহুজাতিক কোম্পানির জন্য মুনাফা স্থানান্তর কঠিন হয়ে উঠেছে।
এপ্রিলে এক সাক্ষাৎকারে টেলিনরের সিইও সিগভে ব্রেকে জানান, বিনিয়োগকারীরা নিজ দেশে মুনাফা ফেরত নিতে না পারলে পাকিস্তানে থাকবে না। স্থানীয় মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, তিনটি বহুজাতিক কোম্পানির ১০০-২০০ কোটি ডলার আয় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের ব্যাংকে আটকে ছিল।
অতিরিক্ত কর আরোপও পাকিস্তান ত্যাগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর উদাহরণ হলো শেল। করপোরেট মুনাফার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সুপার ট্যাক্স, ২২ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার ও বৈদেশিক মুদ্রার ঝুঁকি নিতে চায়নি কোম্পানিটি।
অবশ্য কিছু সরকারি কর্মকর্তা বহুজাতিক কোম্পানির পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার ভিন্ন কারণ দেখাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পুনর্গঠনের সিদ্ধান্তের কারণে পাকিস্তানের বাজার ছেড়েছে কোম্পানিগুলো। এর সঙ্গে পাকিস্তানের অর্থনীতির সমস্যা যুক্ত নয়, বরং এখানে ব্যবসা সম্প্রসারণের বড় সম্ভাবনা রয়েছে।’
তবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো পুনর্গঠন করার সময় বিদ্যমান পোর্টফোলিও ছেড়ে যায় না।’ (সূত্র: নিক্কেই এশিয়া)

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us