নীল নদে ইথিওপিয়ার জলবিদ্যুৎ বাঁধ, পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে উত্তেজনা – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন

নীল নদে ইথিওপিয়ার জলবিদ্যুৎ বাঁধ, পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে উত্তেজনা

  • ০৫/০৭/২০২৫

বাঁধটির সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ৭ হাজার ৪০০ কোটি কিউবিক মিটার। এখান থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। ইথিওপিয়ার বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে সক্ষমতা তার দ্বিগুণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে এই বাঁধ থেকে। প্রায় কয়েক শ কোটি ডলার ব্যয়ে নীল নদে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মাণ করেছে ইথিওপিয়া। আগামী সেপ্টেম্বরে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার ঘোষণা দিয়েছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। খবর ডেইলি মেইল। ইথিওপিয়া এই বাঁধের নাম দিয়েছে গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ ড্যাম বা সংক্ষেপে জিইআরডি। উত্তর–পশ্চিমে নীল নদের ওপর ২০১১ সালে এ বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মিসর সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে এ বাঁধ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪০০ কোটি ডলার। একে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাঁধটি প্রায় এক কিলোমিটার প্রশস্ত। উচ্চতা ৪৭৫ ফুট।
বাঁধটির সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ৭ হাজার ৪০০ কোটি কিউবিক মিটার। এখান থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। ইথিওপিয়ার বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে সক্ষমতা তার দ্বিগুণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে এই বাঁধ থেকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো এই বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে দেশটি।
এই বাঁধ নির্মাণের শুরু থেকেই আপত্তি ও সমালোচনা করে এসেছে প্রতিবেশি দুই দেশ মিসর ও সুদান। গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ ড্যাম তাদের পানিনির্ভর অর্থনীতিকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে আশংকা দেশ দুটির। বহু বছর ধরেই এ নিয়ে আলোচনা চলে, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। এর মধ্যে অঞ্চলটিতে সামরিক জোট ও অস্ত্রচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে উত্তেজনা এতটাই বেড়ে যায় যে যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকট হয়ে ওঠে।
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বলেন, ‘দক্ষিণ দিকের প্রতিবেশী মিশর ও সুদানের প্রতি আমাদের বার্তা পরিষ্কার—রেনেসাঁ ড্যাম কোনো হুমকি নয়, বরং একটি যৌথ সুযোগ। এটি শুধু ইথিওপিয়া নয়, গোটা অঞ্চলকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেবে।’
তবে মিশর ও সুদান এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। ২০২৪ সালে মিশর ইথিওপিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী সোমালিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি করে। এরপর সেখানে অস্ত্র, সরঞ্জাম ও বিশেষ বাহিনী পাঠায় এবং শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে ১০,০০০ সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনাও নেয়। এদিকে, মিসরের যে পানির প্রয়োজন তার ৯৭ শতাংশ আসে নীল নদ থেকে। তীব্র পানির সংকটের মধ্যে উজানে বাঁধ নির্মাণকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে দেশটি। এই পরিস্থিতিতে বাঁধ নিয়ে আলোচনা করতে চলতি সপ্তাহেই বৈঠক করেছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও সুদানের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান জেনারেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। বৈঠকে তাঁরা ‘নীল নদ অববাহিকায় একতরফা যেকোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধে তাদের জোরালো অবস্থান’ তুলে ধরেন। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অঞ্চলের পানি ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us