চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় জাপানে রেকর্ড পরিমাণ নিট মুনাফা করেছে ম্যাকডোনাল্ডস। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যখন গ্রাহক ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে, তখন এ খবর এল কোম্পানির সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিবেদনে। জানুয়ারি-জুনে ১ হাজার ৪৮০ কোটি ইয়েন বা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের নিট মুনাফা করেছে ম্যাকডোনাল্ডস, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি।
জানুয়ারিতে জাপানি ম্যাকডোনাল্ডসের স্ন্যাকসের দাম কিছুটা বেড়েছে। তা সত্ত্বেও ভোক্তা চাহিদা ছিল ঊর্ধ্বমুখী। মূলত বিক্রির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে নিট মুনাফা অর্জনে রেকর্ড করতে পেরেছে এ ফাস্ট ফুড জায়ান্ট।
এ সময় ম্যাকডোনাল্ডসের আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ২০ হাজার ৯০ কোটি ইয়েনে পৌঁছে। অন্যদিকে পরিচালন মুনাফা ৩২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৩৭০ কোটি ইয়েনে, যা যেকোনো বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় বেশি। ম্যাকডোনাল্ডসের দোকানগুলোয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
জানুয়ারিতে ম্যাকডোনাল্ডসের শীর্ষ বিক্রীত পণ্য বিগ ম্যাক বার্গারসহ কোম্পানিটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পণ্যের দাম ১০-৩০ ইয়েন বাড়ানো হয়েছিল। এতে ভোক্তার ব্যয় গড়ে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ে। একই সময়ে গ্রাহক বেড়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বছরের ছয় মাসে আয় বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাকডোনাল্ডস জাপানের রেস্তোরাঁ পরিচালনা ইউনিটের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা শুকো ইয়োশিদা।
দাম বাড়ানোর পর কুপন ও সীমিত সময়ের জন্য মূল্যছাড়ের মাধ্যমে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করেছে কোম্পানিটি। একই উদ্দেশ্যে টেরিয়াকি এগ বার্গার ও ইউরোপীয় স্বাদের বার্গারের মতো আইটেম সীমিত সময়ের জন্য বাজারে এনেছে। দুপুরের খাবারের বাইরে নতুন পণ্য সম্প্রসারণও কোম্পানির সাফল্যে ভূমিকা রেখেছে।
কফির বাজারেও নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছে ম্যাকডোনাল্ডস। এ লক্ষ্যে ২০২৩ সাল থেকে বিভিন্ন ফ্লেভারের কফি আনছে বাজারে। গ্রাহকের সকালের নাশতা বা কফি বিরতির সময় ম্যাকডোনাল্ডসের কফি কিনতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলো কফির দাম বাড়ালেও ম্যাকডোনাল্ডস প্রতি কাপ কফি মাত্র ১২০ ইয়েনে বিক্রি করছে।
ম্যাকডোনাল্ডস টাচ-স্ক্রিনসম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় অর্ডারিং টার্মিনাল ও দোকানের সংখ্যা বাড়িয়েছে, যাতে ভোক্তারা আরো দ্রুত তাদের অর্ডার বুঝে নিতে পারেন। জুনে জাপানের ৭৫০টি স্থানে এ ধরনের টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। চলতি বছর শেষে আরো ১ হাজার দোকানে এ প্রযুক্তি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে রেস্তোরাঁ অপারেটরটি।
ইচিয়োশি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক সেইইচিরো সামেজিমা বলেন, ‘ম্যাকডোনাল্ডস জাপান সস্তা ও নিম্নমানের ইমেজ থেকে নিজেকে আলাদা করতে পেরেছে।”করোনাভাইরাস মহামারীর আগের তুলনায় কোম্পানিটির বিক্রি ৪০ শতাংশ বেড়েছে। বিক্রি বাড়ানোয় সহায়ক স্টোর ব্যবস্থাপনা, যেমন নিয়োগ ও ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ায় কোম্পানিটি প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে।’ (খবর: নিক্কেইএশিয়া)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন