হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রতিবেদন সিঙ্গাপুর ও কানাডায় অভিবাসনে ধনীদের আগ্রহ কমছে – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ০৯ Jul ২০২৫, ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রতিবেদন সিঙ্গাপুর ও কানাডায় অভিবাসনে ধনীদের আগ্রহ কমছে

  • ৩০/০৬/২০২৫

ধনীদের অভিবাসনের জন্য একসময় শীর্ষ গন্তব্যের তালিকায় ছিল সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড। কিন্তু সেই প্রবণতায় খরা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, চলতি বছর নিট ১ হাজার ৬০০ মিলিয়নেয়ারের গন্তব্য হতে পারে এশিয়ার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র সিঙ্গাপুর, যা ২০২৪ সালের জন্য প্রক্ষেপিত ৩ হাজার ৫০০ জনের অর্ধেকেরও কম। খবর দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
‘হেনলি প্রাইভেট ওয়েলথ মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৫’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চলতি বছর বিশ্বব্যাপী রেকর্ড সংখ্যক ১ লাখ ৪২ হাজার মিলিয়নেয়ার অন্য দেশে পাড়ি জমাবেন। এর মধ্যে এক সময়ের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড সর্বনিম্ন নিট অভিবাসন প্রত্যক্ষ করতে পারে। অর্থাৎ এসব দেশের প্রতি মিলিয়নেয়ারদের আগ্রহ কমছে।
অন্যদিকে থাইল্যান্ডে নিট ৪৫০ মিলিয়নেয়ারের গন্তব্য হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দেশটি দ্রুতই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নতুন নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক।
প্রতিবেদন অনুসারে, চীন, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ সম্পদধারীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্যাংকক। এর কারণ হলো শহরটিতে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মানের স্কুল, দ্রুত বিকাশমান আর্থিক খাত ও বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট বাজার।
এদিকে প্রথমবারের মতো চীন থেকে মিলিয়নেয়ারদের অভিবাসনের গতি ধীর হতে যাচ্ছে। পূর্বাভাস অনুসারে, দেশটি থেকে ২০২৫ সালে নিট ৭ হাজার ৮০০ মিলিয়নেয়ার বিদেশে থিতু হতে পারেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, কভিড-পরবর্তী আর্থিক পুনরুদ্ধার, নিয়ন্ত্রক পরিবেশে স্বচ্ছতা এবং দেশীয় বিনিয়োগের জন্য নতুন প্রণোদনা চীনের ধনীদের মধ্যে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে। শেনজেন ও হাংজোর মতো প্রযুক্তি খাতের সমৃদ্ধ কেন্দ্র এবং বিনোদন ও আতিথেয়তা খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি আরো বেশি চীনা ধনীকে দেশে থাকতে উৎসাহিত করছে।
২০১৯-২২ সালে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে হংকং ছেড়ে গিয়েছিলেন ধনীরা। এর বিপরীতে চলতি বছর হংকং নিট ৮০০ মিলিয়নেয়ারের আগমন প্রত্যাশা করছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে ধনী ব্যক্তিদের আকর্ষণ করছে হংকং।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের গ্রুপ হেড অব প্রাইভেট ক্লায়েন্টস ডমিনিক ভোলেক বলেন, ‘আর্থিক সুযোগ বাড়াতে এবং ঝুঁকি কমাতে এখন এশিয়ার অতিধনী পরিবারগুলো ক্রমেই তাদের কার্যক্রম হংকং ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ভাগ করে নিচ্ছে।’
এদিকে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি মিলিয়নেয়ার হারাতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্য সংগ্রহের পর থেকে এত বড় নিট দেশত্যাগ আর দেখা যায়নি। ১৬ হাজার ৫০০ মিলিয়নেয়ার চলতি বছর যুক্তরাজ্য ছাড়বেন বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। যার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে দেশটির সাম্প্রতিক কর সংস্কার। যুক্তরাজ্যের ধনী ব্যক্তিরা এখন করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাত, মোনাকো ও মাল্টার মতো দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। অনেকে বেছে নিচ্ছেন ইতালি, গ্রিস, পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড।
এছাড়া প্রথমবারের মতো ইউরোপের বড় দেশ ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানি নিট মিলিয়নেয়ার হ্রাস প্রত্যক্ষ করবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। কারণ ধনী ইউরোপিয়ানরা এখন মহাদেশটির বিনিয়োগবান্ধব অঞ্চলগুলোয় ছুটছেন। হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের গবেষণা অনুসারে, ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি ধনীর অভিবাসন প্রত্যক্ষ করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ৯ হাজার ৮০০ জন। এর পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখবে দেশটির গোল্ডেন ভিসা কর্মসূচি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us