বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) আমদানির ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শুল্ক বাধাকে চ্যালেঞ্জ করল বেইজিং। ব্রাসেলসের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বিরোধ নিয়ে গত সপ্তাহে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) দ্বারস্থ হয়েছে চীন।
চীনের বিরুদ্ধে ইইউর অভিযোগ দেশটি গাড়ি শিল্পকে অন্যায়ভাবে ভর্তুকি দিচ্ছে। এ কারণে ইউরোপীয় গাড়ি কোম্পানিগুলো ইভি খাতে পিছিয়ে পড়ছে। গত জুনের শুরুতে ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশন জানায়, কয়েক মাসের তদন্তের পর তারা এ বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছে।
অবশ্য শুল্ক আরোপের বিষয়টি এখনো অস্থায়ী পর্যায়ে রয়েছে, আগামী নভেম্বরে ইইউ সদস্য দেশগুলো এ বিষয়ে ভোট দেবে। গত সপ্তাহে ইইউর বাণিজ্য কমিশনের প্রধান ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস জানান, জোটভুক্ত দেশগুলো স্থায়ীভাবে শুল্ক আরোপে অনুমোদন দেবে বলে আশা করছেন।
তদন্তে কতটা সাহায্য করেছে সে অনুসারে শুল্কহার নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ইভি প্রস্তুতকারক গিলি ও বিওয়াইডি। চীনা কোম্পানি দুটির পাশাপাশি দেশটিতে কারখানা পরিচালনা করছে— এমন বিদেশী কোম্পানিও তদন্তের আওতায় ছিল। বিদ্যমান ও নতুন হার মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক দিতে হবে ইভি নির্মাতাদের।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অভিযোগ প্রসঙ্গে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইইউর পদক্ষেপ গুরুতরভাবে ডব্লিউটিওর নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বৈশ্বিক সহযোগিতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অবিলম্বে ভুল অনুশীলনের সংশোধন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা এবং ইভি শিল্পের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে ইইউর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ইউরোপিয়ান কমিশন বলছে, তারা চীনা অভিযোগকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। ডব্লিউটিওর নিয়মানুসারে, যথাসময়ে চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাবে। আরো বলা হয়, ইইউ বাণিজ্য কমিশনের তদন্ত ও অস্থায়ী শুল্ক ডব্লিউটিওর নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস আরো জানান, এ ধরনের শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মানুসারে নিষিদ্ধ নয়। ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সুরক্ষাবাদী নীতির বিপরীতে ডব্লিউটিওতে চীনের অভিযোগকে ‘মৃদু প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করছেন বিশ্লেষকরা। চীনের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বেইজিংকে আরো শক্তিশালী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। বর্তমানে শ্লথ প্রবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়ছে চীন, সেখানে ইভির ওপর শুল্ক বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অবশ্য ইইউর শুল্ক বাধার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে চীন। বাণিজ্য কমিশনের তদন্ত শুরুর পর গত জানুয়ারিতে ফরাসি পানীয় আমদানির বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ডাম্পিং তদন্ত শুরু করে। জুনের মাঝামাঝিতে ইইউ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি বিষয়ে অ্যান্টি-ডাম্পিং তদন্ত শুরু করে। এ তদন্তের ফলাফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে স্পেন, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, জার্মানি ও বেলজিয়াম।
এছাড়া চীনা বায়ু টারবাইন ও সৌরবিদ্যুৎ পণ্য এবং চীনা জৈব জ্বালানির আমদানির বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ডাম্পিং ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে ব্রাসেলস। (সূত্র: এফটি)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন