কিছু আরব দেশের সাহায্য নিয়ে ইরানের ড্রোন বিধ্বস্ত করেছে মার্কিন ও ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।
শনিবার রাতে ইরান যখন ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায় তখন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি কয়েকটি আরব দেশও ইসরায়েলের সাহায্যে এগিয়ে আসে। জর্ডান বা সৌদি আরবের মতো দেশগুলো যে ইরানের মিসাইল ও ড্রোন আক্রমণকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য সক্রিয় ছিল, সেটাকে স্বাভাবিক বলেই অভিহিত করেছেন অনেক বিশ্লেষক। রবিবার (১৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জার্মানের সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের বিরোধটা অনেক পুরানো। তারপরও গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের পর অনেকেই ধারণা করেছিল ইরানের এই হামলায় সৌদি আরব বুঝি ইরানের পক্ষ নেবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। সৌদির অবস্থান কিছুটা বোঝা গেলেও জর্ডানের ভূমিকা অনেককেই অবাক করেছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যখন জর্ডানের ওপর দিয়ে ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছিল, জর্ডান তার বেশ কয়েকটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এভাবে জর্ডান নিজেকে ইসরায়েলের সহযোগী শক্তি হিসাবেই এবার আবির্ভূত হয়েছে। কেবল ইরানের ড্রোনগুলোকে ধ্বংসই নয়, একই সঙ্গে জর্ডান তার আকাশকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের জন্য খুলেও দিয়েছে।
বৃটেনের প্রভাবশালী মিডিয়া দি ইকোনমিস্ট জানায়, সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ এই সংঘাতে পরোক্ষভাবে ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ ইজরাইলের পক্ষালম্বনকারী দেশের যুদ্ধ বিমানের তেল নেওয়ার জন্য তাদের বিমানবন্দরগুলোকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
মিডল ইস্ট অ্যান্ড নর্থ আফ্রিকা প্রোগ্রামের ডিরেক্টর জুলিয়েন বার্নস ডিকে’র মতে, ইরানের এই হামলার ফলে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে মধ্যপ্রচ্যের কোন কোন দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে আছে। দেখা গেছে কদিন আগেও যে দেশগুলো গাজার ঘটনায় ইসরায়েলের ঘোরতর বিরোধিতা করেছে, তাদের অনেকেই ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে।
গাজার ঘটনায় এতদিন জর্ডানকে খুবই সোচ্চার দেখা গেছে। এর দৃশ্যমান কারণও ছিল। জর্ডানে প্রচুর ফিলিস্তিনি রয়েছে। দেখা গেছে প্রতি পাঁচজনের একজন ফিলিস্তিনি বংশদ্ভূত। এমনকি জর্ডানের বর্তমান রানীও ফিলিস্তিনের। তাই গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতার জর্ডানের এমন তীব্র সমালোচনা ছিল খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু জর্ডানই যখন এবার ইসরায়েলের সমর্থনে এতটা প্রকাশ্য ভূমিকা রেখেছে, অনেকেই অবাক হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জর্ডানের এবারের ভূমিকা অনেকটা তাদের নিজেদের স্বার্থেই। ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের সীমান্ত রয়েছে। তাছাড়া তারা আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। কাজেই নিজের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আত্মরক্ষার স্বার্থেই দ্রুততার সঙ্গে ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়ার কথা ঘোষণা করা ছাড়া তাদের সহজ কোন পথ ছিল না।
ক্যাটাগরিঃ আন্তর্জাতিক
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন