উত্তর-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশে সম্প্রতি তাপমাত্রা বেড়েছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হওয়ায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উত্তর-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশে সম্প্রতি তাপমাত্রা বেড়েছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হওয়ায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহে এশিয়ার স্পট মার্কেটে বেড়েছে জ্বালানি পণ্যটির দাম।
শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় জুলাইয়ে সরবরাহের জন্য চলতি সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১২ ডলার ৬০ সেন্ট, যা এপ্রিলের শুরুর পর সর্বোচ্চ। আগের সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ১২ ডলার ৩০ সেন্টে বেচাকেনা হয়েছে। এদিকে আগস্টে সরবরাহের জন্য চলতি সপ্তাহে এলএনজির গড় মূল্য ছিল এমএমবিটিইউয়ে ১২ ডলার ৭০ সেন্ট। এ বিষয়ে ব্রেইনচাইল্ড কমোডিটি ইন্টেলিজেন্সের বাজার বিশ্লেষক ক্লাস ডোজম্যান বলেন, ‘মধ্যপ্রচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে চলতি সপ্তাহে এলএনজির দাম বেড়েছে। তবে কাতার থেকে হরমুজ প্রণালি হয়ে রফতানি বাধাগ্রস্ত হলে প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজির বাজারে প্রকৃত ঝুঁকি তৈরি হবে। যদিও সামরিক হুমকি থাকলেও এ আশঙ্কা আপাতত নেই।’
উল্লেখ্য, বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ এলএনজি রফতানিকারক দেশ কাতার। দেশটি বেশির ভাগ সরবরাহের ক্ষেত্রে অধিকাংশ হরমুজ প্রণালি ব্যবহার করে। আর্গাসের হেড অব এলএনজি প্রাইসিং মার্টিন সিনিয়র বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার বাড়তি চাহিদা, সেই সঙ্গে গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগে তাইওয়ান ও চীনের অতিরিক্ত আমদানি চেষ্টাও দাম বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।’
গবেষণা ও বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান রাইস্ট্যাড এনার্জি জানিয়েছে, চীনের অনেক অঞ্চলে স্বাভাবিকের তুলনায় গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। এতে জুনের শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়তে পারে। জাপানেও মাসের শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা থাকার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা। ফলে ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে এলএনজির চাহিদা।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস গত বৃহস্পতিবার জুলাইয়ে সরবরাহের চুক্তিতে নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার আদর্শে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম স্থির করেছে প্রায় ১২ ডলারে। একই মাসের সরবরাহ চুক্তিতে টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে ৪৫ সেন্ট ছাড় দেয়া হয়েছে। আরগাস প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১১ ডলার ৯৫ সেন্ট। অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিজ জুলাইয়ে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১১ ডলার ৮২ সেন্ট।
এদিকে স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে উত্তমাশার অন্তরীপ হয়ে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় এলএনজি রফতানি চলতি সপ্তাহে বেড়েছে, তবে ইউরোপে তা খুব সামান্য। অন্যদিকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো বেড়েছে পানামা খাল হয়ে এশিয়ায় রফতানির পরিমাণ। তিনি আরো জানান, আটলান্টিক মহাসাগরীয় পথে এলএনজি পরিবহন ব্যয় চলতি সপ্তাহে দৈনিক ৩৩ হাজার ডলারে নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে এলএনজি পরিবহন ব্যয় দৈনিক ২০ হাজার ৭৫০ ডলারে স্থিতিশীল আছে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন