ইরানে ইসরায়েলের হামলাঃ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি – The Finance BD
 ঢাকা     শুক্রবার, ২৭ Jun ২০২৫, ১২:১৩ অপরাহ্ন

ইরানে ইসরায়েলের হামলাঃ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি

  • ১৪/০৬/২০২৫

ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ভূরাজনৈতিক এমন উত্তেজনার কারণে ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে গতকাল পণ্যটির দাম ৭ শতাংশের বেশি বেড়ে কয়েক মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। খবর রয়টার্স।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল ব্যারেলে ৫ ডলার ১০ সেন্ট বা প্রায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৪ ডলার ৪৬ সেন্টে। গতকাল জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে সর্বোচ্চ ৭৮ ডলার ৫০ সেন্টে পৌঁছেছিল, যা ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম গতকাল বেড়েছে ৫ ডলার ১০ সেন্ট বা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যারেলপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ৭৩ ডলার ১৫ সেন্টে। পণ্যটির দাম দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৭ ডলার ৬২ সেন্টে পৌঁছেছিল, যা ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। গতকাল ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম ২০২২ সালের পর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। সে সময় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পণ্যটির দামে ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা দিয়েছিল।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও সামরিক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। দেশটি এটিকে একটি দীর্ঘমেয়াদি অভিযান হিসেবে ঘোষণা করেছে। যার লক্ষ্য তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ থেকে বিরত রাখা। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় নাতাঞ্জের পারমাণবিক স্থাপনাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো তেজস্ক্রিয় বা রাসায়নিক দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুইডেনভিত্তিক বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এসইবির বিশ্লেষক ওলে হভালবাই বলেন, ‘‌বর্তমানে মূল উদ্বেগ হরমুজ প্রণালি প্রভাবিত হবে কিনা তা নিয়ে। এটি একটি কৌশলগত জলপথ, যার মাধ্যমে বিশ্বের মোট জ্বালানি তেল ব্যবহারের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বা দৈনিক ১ কোটি ৮০ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল আমদানি-রফতানি করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত এর ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি।’ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে বা অঞ্চলটির বড় জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২০-১৩০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এটি এরই মধ্যে দেয়া বিভিন্ন পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ব্রিটিশ বহুজাতিক ব্যাংক বার্কলেসের বিশ্লেষক অমরপ্রীত সিংহ বলেন, ‘‌গত তিনদিনে ১০ ডলার মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেও এখন পর্যন্ত ইরানের জ্বালানি তেল উত্তোলন হ্রাস বা হরমুজ প্রণালির মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হয়নি।’
গবেষণা ও বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান রিস্টাড এনার্জির বিশ্লেষক জানিভ শাহ বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সপ্তাহের শেষেও অব্যাহত না থাকতে পারে। পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা কম। দামের এ ঊর্ধ্বগতি বাধার মুখে পড়তে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মৌলিকভাবে ইরানের প্রায় সব জ্বালানি তেলই চীনে রফতানি হয়। সেক্ষেত্রে চীনের ছাড়ে কেনা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়বে। এক্ষেত্রে ওপেক প্লাসের অতিরিক্ত উত্তোলন সক্ষমতা একটি স্থিতিশীলতা আনতে পারে।’

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us