চলতি বছরে ২০২৩ সালের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ১০ কোটি ডলার দামের বাড়ি বিক্রি দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তেমন নজির দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট কোম্পানি মিলার স্যামুয়েল ও ডগলাস এলিম্যান। কোম্পানি দুটি বলছে, জানুয়ারি থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ১০ কোটি ডলারের বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রে ছয়টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে গত বছরের তুলনায় অতি বিলাসবহুল বাড়ির বিক্রি দ্বিগুণ হবে। এ সংখ্যা ২০২১ সালের রেকর্ড নয়টি বাড়ি বিক্রিকে ছাড়িয়ে যাবে।
সাধারণত ১০ কোটি ডলার বা তার বেশি দামে বিক্রি হওয়া বাড়ির সংখ্যা কম থাকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ১০ কোটি ডলারের কম দামের বাড়ি বিক্রিতেও পতন দেখা যায়। তাই অতিমূল্যের বাড়ির ক্ষেত্রে চলতি বছরে বিক্রির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে মার্কিন আবাসন খাতের জন্য ইতিবাচক হবে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের। এক্ষেত্রে উচ্চ বন্ধকি হার ও সরবরাহে ঘাটতি এখনো বাধা হিসেবে কাজ করছে।
মিলার স্যামুয়েলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জোনাথন মিলার বলেন, ‘জুলাই পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে তা বেশ ইতিবাচক। আবাসন খাতে সচরাচর এমন দেখা যায় না।’
নিউইয়র্কের ম্যানহাটন শহরে গত মাসে অতি বিলাসবহুল দুটি বাড়ি বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সাড়ে ১১ কোটি ডলারে বিক্রি হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু আবাসিক ভবন সেন্ট্রাল পার্ক টাওয়ারের একটি পেন্টহাউজ। তবে ক্রেতার নাম উল্লেখ করা হয়নি। অন্যটি হচ্ছে নিউইয়র্কের আমান পেন্টহাউজ। যেটি সাড়ে ১৩ কোটি ডলারে কিনেছেন রুশ বংশোদ্ভূত ধনকুবের ভ্লাদিস্লাভ ডোরোনিন।
এছাড়া ফ্লোরিডার পাম বিচের একমাত্র ব্যক্তিগত দ্বীপ তারপন আইল্যান্ড মে মাসে ১৫ কোটি ডলারে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ক্রীড়াসামগ্রী উৎপাদনকারী কোম্পানি ওকলির প্রতিষ্ঠাতা জেমস জ্যানার্ড কিছুদিন আগে তার মালিবু প্রাসাদটি ২১ কোটি ডলারে বিক্রি করেছেন, যা ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি বাড়ি।
রিয়েল এস্টেট কোম্পানি রেডফিনের দেয়া তথ্যানুসারে, জুন পর্যন্ত ৫০ লাখ ডলার বা তার বেশি দামের বাড়ি বিক্রি হয়েছে চার হাজারের মতো, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।
শিকাগোভিত্তিক ক্রিস্টি’জ ইন্টারন্যাশনাল রিয়েল এস্টেটের সহপ্রতিষ্ঠাতা মাইক গোল্ডেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে নিঃসন্দেহে তা চলতি বছরের জন্য বেশ ভালো। অনেকেই এতটা আশা করেনি।’
ক্রিস্টি’জ ইন্টারন্যাশনালের ‘২০২৪ মিড-ইয়ার লাক্সারি আউটলুক’ প্রতিবেদন অনুসারে, উচ্চবিত্তদের মাঝে বিলাসী বাড়ির চাহিদা বাড়ছে। ফ্লোরিডার নেপলসে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-জুন) ১ কোটি ডলারের বেশি দামের বাড়ি বিক্রি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে পিওরওয়েস্ট ক্রিস্টি’জ ইন্টারন্যাশনাল রিয়েল এস্টেটের তথ্যানুযায়ী, মে মাসে মন্টানায় ৪০ লাখ ডলারের বেশি দামের বাড়ি বিক্রি বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
মিলার স্যামুয়েল জানিয়েছে, বন্ধকি সুদহারের ওপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন খাত। যখন সুদহার কম থাকে, তখন অধিকাংশ মার্কিন পছন্দের বাড়ি কিনতে বায়না দিয়ে থাকেন। তবে যারা অতি বিলাসবহুল বাড়ি কেনেন, তাদের ক্ষেত্রে এমন কোনো সমস্যা নেই। তারা নগদ পরিশোধের মাধ্যমেই কিনে থাকেন। ম্যানহাটনে গত বসন্তে বিক্রি হওয়া বিলাসবহুল বাড়ির দুই-তৃতীয়াংশই ছিল নগদ পরিশোধের মাধ্যমে, যদিও তখন শেয়ারের দাম বেশি ছিল। (সূত্র: সিএনবিসি)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন