যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও তুলা কিনতে পারে বাংলাদেশ: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস – The Finance BD
 ঢাকা     রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও তুলা কিনতে পারে বাংলাদেশ: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

  • ৩১/০৫/২০২৫

এসময় তিনি উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেশের প্রতিটি অংশীদারের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাইছেন। যদি আমাদের আমেরিকান পণ্য কেনার প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়, তবে অন্যান্য দেশ থেকে একই ধরনের পণ্য আমদানি থেকে সরে আসবে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি ৩৭ শতাংশ শুল্কের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ শুল্ক আপাতত স্থগিত রাখলেও—দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে না পারলে কার্যকর হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। ট্রাম্পের এই পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি তুলা, তেল ও গ্যাস কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় এই প্রস্তাব ব্যবহার করা হবে। জাপানের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম নিক্কেই এর বার্ষিক “ফিউচার অব এশিয়া” সম্মেলনের সাইডলাইনে এ সাক্ষাৎকার দেন প্রধান উপদেষ্টা। এসময় তিনি উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেশের প্রতিটি অংশীদারের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাইছেন। যদি আমাদের আমেরিকান পণ্য কেনার প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়, তবে অন্যান্য দেশ থেকে একই ধরনের পণ্য আমদানি থেকে সরে আসবে বাংলাদেশ।
ড. ইউনূস বলেন, “যেমন মধ্য এশিয়া থেকে আমরা প্রচুর তুলা কিনি। ভারত থেকেও তুলা কিনি। এখন আমরা দেখছি…কেন আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিনব না, যাতে (যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের) বাণিজ্য ঘাটতি অনেক কমে যায়।”
গত জুন পর্যন্ত অর্থবছরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৬৮০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এই আমদানির মধ্যে ৩৬ কোটি ডলারের তুলা ছিল। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পোশাকপণ্য প্রস্তুতকারক হওয়ায় বাংলাদেশ ৭৯০ কোটি ডলারের তুলা কিনে থাকে। যার কিছু অংশ আমদানি হয় উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের মতো মধ্য এশিয়ার দেশ থেকে। প্রতিবেশী ভারত থেকে বিপুল তুলা আমদানি হয়। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট আমদানির ১২ দশমিক ৫০ শতাংশই ছিল তুলা। ড. ইউনূস বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদকেরা আমাদের খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে কিছু রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে তাঁরা হয়তো আমাদের জন্য সহায়ক হতে পারেন।” তিনি আরও বলেন, “আমেরিকার কটন বেল্ট (রাজ্যগুলো) তাদের নিজ নিজ প্রতিনিধি হিসেবে কংগ্রেস সদস্য, হাউস (এবং) সিনেটে নির্বাচন করে, তাই তারাও আমাদের সমর্থক হয়ে উঠবেন।” জ্বালানি আমদানির প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল আমদানি করলেও—যুক্তরাষ্ট্র থেকেও এ পণ্য আমদানি করা সম্ভব। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার সময়সূচি ও সম্ভাব্য শুল্ক হ্রাসের পরিমাণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত না হলেও তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টিকে হুমকি হিসেবে নয়, বরং একটি সুযোগ হিসেবে দেখছি।” এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক কার্যকর হওয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আদালত রায়ে উল্লেখ করে যে, সংবিধান অনুযায়ী বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার কংগ্রেসের, প্রেসিডেন্টের নয়। দেশীয় প্রেক্ষাপটে প্রফেসর ড. ইউনূস বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। এর মধ্যে ১১-১২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ দেশের ভেতরে শনাক্ত ও জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের পুনরুদ্ধার সম্ভব হলে বর্তমান সরকার দুটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল (সভরেন ওয়েলথ ফান্ড) গঠনের পরিকল্পনা করেছে, যা দিয়ে দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হবে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ও তরুণ উদ্যোক্তা গঠনে কাজ করা হবে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us