যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক মন্দার শঙ্কা বাড়ছে। একাধিক বিশ্লেষণে এমন শঙ্কা করা হয়েছে। এর মধ্যেই ওয়াল স্ট্র্রিটের মূল সূচকগুলোয় এবং বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস নেমেছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সম্পর্কিত কিছু উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে। গত শুক্রবার প্রকাশিত দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের নতুন এ কর্মসংস্থান পরিসংখ্যান অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা জোরদার করছে। বেকারত্বের হারের এ বৃদ্ধি বাজারের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেকারত্বের এমন বৃদ্ধি আসন্ন মন্দার লক্ষণ।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতি সম্পর্কিত কিছু উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২১ সালের অক্টোবরের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বেকারত্বের পরিসংখ্যান। বেকারত্বের হারের এ বৃদ্ধি বাজারের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি এবং এর ফলে মন্দার আশঙ্কা তীব্র করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বেকারত্বের ব্যাপক বৃদ্ধি আসন্ন মন্দার লক্ষণ।
তাই গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ইনকরপোরেটেডের অর্থনীতিবিদরা আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের মন্দা নিয়ে তাদের ঝুঁকির অনুমান ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশে নিয়ে গেছেন। যদিও এই আশ্বাসও দেয়া হয়েছে, অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা থাকলেও হঠাৎ করে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন, মন্দার ঝুঁকি বাড়লেও, এমন অনেক কারণ রয়েছে যার কারণে মনে হচ্ছে বেকারত্ব বাড়লেও, অর্থনীতিতে হঠাৎ বড় পতন ঘটবে না।
গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদরা এক প্রতিবেদনে বলেছেন, এখনও মন্দার ঝুঁকি সীমিত বলে মনে করছেন তারা। এই মুহূর্তে কোনো বড় আর্থিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেডের সুদহার কমানোর অনেক সুযোগ রয়েছে এবং প্রয়োজনে ফেডারেল রিজার্ভ শিগগির সুদের হার কমাতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের মন্দার এ আশঙ্কার প্রভাব দেখা গেছে দেশটির পুঁজিবাজারে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে দেশটির বেঞ্চমার্ক সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্য দুই প্রধান সূচকেরও পতন হয়েছে। গতকাল ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজের পতন হয়েছে ৮০০ পয়েন্ট বা প্রায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ, এর আগের দিন গত সোমবার যা ছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ (৯০০ পয়েন্ট কম)। নাসডাক কমে ২ দশমিক ৮ শতাংশ।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার, ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল গড় ৬১০ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ কমেছিল। যেখানে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ ক্ষতিতে ছিল। নাসডাক সূচক ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে। ইউরোপ ও এশিয়ার পুঁজিবাজারসহ সবখানে বেচাকেনার অবস্থা এবং বিশ্ববাজারে হঠাৎ করেই সেল শুরু হওয়ায় ওয়াল স্ট্রিটের সূচকগুলোয় ধস দেখা যাচ্ছে।
পুঁজিবাজারে ধসের একটি বড় কারণ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আশানুরূপ কর্মসংস্থান না হওয়া। কোম্পানিগুলো নিয়োগের গতি মন্থর করেছে। গত মাসে মাত্র ১ লাখ ১৪ হাজার নতুন চাকরি যোগ হয়েছে, যা অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। মজুরিও আগের মাসের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এর গতি ছিল ধীর।
এদিকে মঙ্গলবার বিশ্বের একাধিক পুঁজিবাজারে পতন দেখা গেছে। সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার জাপানের পুঁজিবাজারে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি পয়েন্টে ধস নামে। ৬ শতাংশ পড়ে যায় দেশটির স্টক মার্কেট। এ দিন বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ধস দেখা গেছে ভারতের সেনসেক্স এবং নিফটি৫০-এ। এছাড়া তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, সাংহাই সবখানেই পুঁজিবাজার ধাক্কা খেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তীব্র পতনের কারণে এসব পুঁজিবাজার এ দিন দরপতনের সঙ্গে খুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উচ্চ সুদের হার বজায় রেখে মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেষ্টা করছে। অনেক অর্থনীতিবিদ ও বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, শ্রমবাজার শান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা গেলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমাবে।
Source: এপি।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন