সানডে টাইমসের ধনীর তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দুজা পরিবার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রিউবেন ভাইয়েরা, আর তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ব্রিটিশ-আমেরিকান ব্যবসায়ী স্যার লিওনার্ড ব্লাভাটনিক। যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ধনকুবেরদের সংখ্যা গত এক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ২০২৫ সালের সানডে টাইমস রিচ লিস্ট অনুযায়ী, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ১৫৬ জন বিলিয়নেয়ার রয়েছেন। যেখানে ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৬৫। অর্থাৎ মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ৯ জন বিলিয়নেয়ার হারিয়ে গেছেন, যা রিচ লিস্টের ৩৭ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পতন। খবর বিবিসি।
এই পতনের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে সরকারের সাম্প্রতিক করনীতিকে। বিশেষ করে নন-ডম কর সুবিধা বাতিল করায় দেশের ভেতরে ও বাইরে থাকা ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। আগে যারা দেশের বাইরে আয় করতেন, তারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করেও সে আয় করমুক্ত রাখতে পারতেন। নতুন নীতিতে এখন শুধু প্রথম চার বছর এই সুবিধা থাকবে। সরকারের দাবি, এই করনীতির পরিবর্তনে আগামী পাঁচ বছরে ১ হাজার ২৭০ কোটি পাউন্ড রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে। কিন্তু অনেক ধনীর দাবি, এই নীতির ফলে তারা যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ ও বসবাসে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
তবে দেশের রাজপরিবারের আর্থিক অবস্থা ভিন্ন দিকে এগোচ্ছে। রাজা তৃতীয় চার্লসের সম্পদ গত এক বছরে বেড়েছে ৩ কোটি পাউন্ড। যা তাকে তুলেছে রিচ লিস্টের ২৫৮তম স্থানে। তার মোট সম্পদ এখন ৬৪ কোটি পাউন্ড, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সমান। এই বৃদ্ধির ফলে চার্লস এখন তার মা, প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের থেকেও বেশি ধনী। রানী এলিজাবেথের মৃত্যুর আগে তার সম্পদ ছিল ৩৭ কোটি পাউন্ড।
রাজা চার্লসের এই সম্পদের বড় অংশ আসে ডাচ অফ ল্যাঙ্কাস্টার নামক একটি ব্যক্তিগত এস্টেট থেকে। যার মোট মূল্য ৬৫ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ড। যা থেকে প্রতি বছর প্রায় ২ কোটি পাউন্ড আয় হয়। এছাড়াও, রানি এলিজাবেথের থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পদেও তাকে কর দিতে হয়নি, কারণ রাজপরিবারের উত্তরাধিকারে কর মাফ থাকে। এদিকে সানডে টাইমসের ধনীর তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দুজা পরিবার। তাদের মোট সম্পদ কিছুটা কমে ৩ হাজার ৫৩০ কোটিতে নেমে এসেছে, তবুও তারা এখনও সবচেয়ে ধনী। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রিউবেন ভাইয়েরা, আর তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ব্রিটিশ-আমেরিকান ব্যবসায়ী স্যার লিওনার্ড ব্লাভাটনিক।
তালিকায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আংশিক মালিক স্যার জিম র্যাটক্লিফ। এক বছরে তার সম্পদ কমেছে ৬৪৭ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড, যা তার মোট সম্পদের এক চতুর্থাংশেরও বেশি। এর ফলে তিনি তালিকায় চতুর্থ স্থান থেকে সরিয়ে সপ্তম স্থানে নেমে এসেছেন। তবে শুধু শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীরাই নন, এই তালিকায় রয়েছেন অনেক সেলিব্রিটিও। পপ তারকা দুয়া লিপা, যিনি মাত্র ২৯ বছর বয়সে ১১ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড সম্পদের মালিক হয়েছেন, তিনিই তালিকায় থাকা সবচেয়ে কনিষ্ঠ ব্যক্তি। পাশাপাশি হ্যারি স্টাইলসের সম্পদ ২২ কোটি ৫০ লাখ ও এড শিরানের ৩৭ কোটি পাউন্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন