ব্যবহৃত ব্যাটারি দিয়ে জাম্বিয়ায় একটি ১২০ কিলোওয়াটের মিনি-গ্রিড সফলভাবে চালু করা হয়েছে। যা একবার চার্জে ১০০টিরও বেশি বাড়িতে দুই দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৮ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়া সম্ভব। বিশ্বের সামনে টেকসই ভবিষ্যতের পরীক্ষাগার হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে আফ্রিকার পাহাড়ি দেশ রুয়ান্ডা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে বিশ্ব যখন দ্রুত ধাবিত হচ্ছে, তখন রুয়ান্ডা বিদ্যুৎচ্চালিত বাইকের পুরোনো ব্যাটারিগুলোকে মিনি-গ্রিড নির্মাণে পুনঃব্যবহার করছে।
রুয়ান্ডাভিত্তিক স্টার্টআপ অ্যাম্পারস্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল বা ই-বাইক বাজারে কাজ করছে। এই ই-বাইকগুলোতে ব্যবহৃত ব্যাটারির আয়ু প্রায় পাঁচ বছর। এই সময়ের পরে ব্যাটারিগুলোর ক্ষমতা ৮০ শতাংশ কমে যায়। তখন এগুলো আর যানবাহনে ব্যবহারযোগ্য থাকে না। কিন্তু ব্যাটারিগুলোকে ফেলে না দিয়ে পুনঃব্যবহার করে ছোট মাপের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সংরক্ষণের ইউনিট বা মিনি-গ্রিড নির্মাণ করছে অ্যাম্পারস্যান্ড। এই প্রকল্পে তাদের সহযোগিতা করছে রুয়ান্ডার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এসএলএস এনার্জি। তারা পুরনো ব্যাটারিগুলোকে দ্বিতীয়বার ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী লেয়ান্দ্রে বেরওয়া জানান, অ্যাম্পারস্যান্ডের দেয়া ব্যবহৃত ব্যাটারি দিয়ে জাম্বিয়ায় একটি ১২০ কিলোওয়াটের মিনি-গ্রিড সফলভাবে চালু করেছে তারা। যা একবার চার্জে ১০০টিরও বেশি বাড়িতে দুই দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৮ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে অ্যাম্পারস্যান্ড কর্তৃপক্ষ।
রুয়ান্ডার বেশিরভাগ গ্রামীণ এলাকা এখনো জাতীয় গ্রিডের বাইরে। ফলে সৌরশক্তি এবং ব্যাটারিনির্ভর মিনি-গ্রিড সেখানে একটি কার্যকর সমাধান। মজার বিষয় হল, এই ব্যবস্থায় ব্যবহৃত ব্যাটারিগুলোর বেশিরভাগই লিথিয়াম আয়রন ফসফেট, যা অত্যন্ত টেকসই এবং নিরাপদ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, এই ধরনের ব্যাটারি পুনঃব্যবহার করলে শুধু পরিবেশগত সুবিধাই নয়, নতুন ব্যাটারির চেয়ে কম খরচে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ সুবিধাও পাওয়া যায়। রুয়ান্ডা সরকারও এই উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোতে সহায়তা করছে। ভবিষ্যতে তারা শুধু ই-বাইকের চার্জিংয়ে নয়, বরং সামগ্রিক বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় এই পুরনো ব্যাটারিগুলোকে ব্যবহার করতে চায়। বিশ্ব যখন টেকসই শক্তির সন্ধানে, তখন রুয়ান্ডার এই উদ্যোগ এক অনন্য উদাহরণ।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন