যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জায়গায় কমলা হ্যারিস আসার পর আরেক প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পদ কমতে শুরু করেছে। মূলত ট্রাম্পের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের শেয়ারের মূল্যহ্রাসের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, গত ২১ জুলাই কমলা হ্যারিস নির্বাচনের ময়দানে প্রবেশ করার পর ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্পের শেয়ারের মূল্য ৯০ কোটি ডলার কমেছে। সেদিনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ট্রুথ সোশ্যালের শেয়ারের মূল্য ২৩ শতাংশ কমেছে; এতেই কমেছে ট্রাম্পের সম্পদ। গত বৃহস্পতিবারও এই কোম্পানির বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন।
গত ১৯ জুলাই ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্পের শেয়ারের দাম ছিল ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলারের বেশি। এরপর জো বাইডেন নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন। এরপর শেয়ারের দাম কমে ট্রাম্পের সম্পদমূল্য ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৩১০ কোটি ডলারে নেমে আসে।
বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনের মাঠে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। অর্থাৎ ট্রাম্পের সম্ভাবনা কমছে। কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা তৈরি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা এখন স্টক কেনাবেচার মধ্য দিয়ে নিজেদের সন্দেহের জানান দিচ্ছেন। তবে ট্রাম্প জিতলে ট্রুথ সোশ্যাল তাঁর আনুষ্ঠানিক যোগাযোগমাধ্যম হতে পারে।
গত জুন মাসে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের বিতর্কে খুবই খারাপ করেন। এ ঘটনার জেরে ট্রাম্পের মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালের শেয়ারের দাম সাময়িকভাবে বেড়ে যায়। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়, ট্রাম্প নির্বাচনে জিততে পারেন। এরপর জুলাই মাসে পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পের ওপর হামলা হলে ট্রুথ সোশ্যালের শেয়ারের দাম কিছুটা বাড়ে।
কিন্তু মানুষের মধ্যে ট্রুথ সোশ্যালের জনপ্রিয়তা তেমন একটা নেই বললেই চলে। জুন মাসে ট্রুথ সোশ্যালে মাসে অন্তত একবার ঢুঁ মারা ব্যবহারকারীরা সংখ্যা ৩৮ শতাংশ কমেছে। কমস্কোর ডেটা বিশ্লেষণ করে দ্য রাইটিং দেখিয়েছে, ট্রুথ সোশ্যালে এ নিয়ে টানা তিন মাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ট্রুথ সোশ্যাল শেয়ারবাজারে আসে। তখন থেকেই এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ওঠানামা করছে। বাজার–বিশ্লেষকেরা বলেন, ট্রাম্পের এই কোম্পানির শেয়ার মৌলভিত্তির ভিত্তিতে লেনদেন হয় না; বরং গুজব ও অতিরঞ্জিত খবরের ভিত্তিতে এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ওঠানামা করে।
এ কোম্পানির সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর শেয়ারের পরিমাণ ১১ কোটি ৪৭ লাখ। ট্রাম্প এই কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং এই মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়ও তিনি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের হিসাব অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোট সম্পদমূল্য ৫৯০ কোটি ডলার।
শেয়ার কেনাবেচার পরও ট্রাম্প মিডিয়ার বাজার মূলধন এখন ৫১০ কোটি ডলার। এই কোম্পানি রাজস্ব আয় অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তুলনায় নগণ্য।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়েছেন, ট্রাম্প মিডিয়া একটি অতি মূল্যায়িত কোম্পানি। গত বছর ট্রাম্প মিডিয়া রাজস্ব আয় করেছে মাত্র ৪১ লাখ ডলার। জেট ব্লু গত বছর আয় করছে এর ২ হাজার ৩০০ গুণ। কিন্তু ট্রাম্প মিডিয়ার বাজার মূলধন জেট ব্লুর চেয়ে বেশি।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন