যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘শুল্ক ব্যবস্থা’ সৃষ্ট বিশ্ব বাণিজ্যের অনিশ্চয়তা সম্পর্কে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন চীনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যদিও স্বল্পস্থায়ী চাপ আছে, তবুও প্রযুক্তিগত স্বাতন্ত্র্য ও বাজার বহুবিধ উপায়ে জোরদার করার মাধ্যমে চীনের প্রযুক্তিগত পণ্য ‘সূর্যোদয়ের সময় হারানো আর সূর্যাস্তের সময় লাভ করা’ যায়। এআই টার্মিনাল থেকে স্বয়ংক্রিয় বিমান পর্যন্ত, স্মার্ট পরিধেয় জিনিসপত্র থেকে পরিষেবা রোবট পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক পরিবেশে অনিশ্চিত উপাদানের সম্মুখীন, অনেক প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তিগত গবেষণা-উন্নয়ন ও সরবরাহ চেইন সুবিন্যস্ত করার কার্যক্রম জোরদার করছে।
আই ফ্লাই টেকের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জান ওয়েন ইয়ু বলেন, কম্পিউটিং বাধা হলো বর্তমানে এআই প্রতিষ্ঠানের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম। সুতরাং আই ফ্লাই টেক হুয়া ওয়ে’র মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গভীর সহযোগিতা চালিয়ে, যৌথভাবে দেশজ কম্পিউটিং পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠা করে, অধিষ্ঠিত সহায়ক সংস্থার মাধ্যমে এআই চিপস গবেষণা-উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে, কোম্পানিটি দর্শনশক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের নতুন হার্ডওয়্যার পণ্য প্রকাশ করবে।
বুদ্ধিমান পরিধেয় ডিভাইস ক্ষেত্রে হাংচৌ লিংবান টেকনোলজি কোং লিমিটেডের নতুন বুদ্ধিমান চশমার ওজন শুধু ৪৯ গ্রাম এবং এআই বস্তু চেনা ও রিয়েল-টাইম অনুবাদ ইত্যাদি ফাংশন আছে। পণ্যটি ওয়েন চৌ ও তান ইয়াংসহ বিভিন্ন জায়গার ঐতিহ্যগত চশমা উত্পাদন শৈলি সংযুক্ত করার পাশাপাশি ইয়াংসি নদীর বদ্বীপ এলাকায় উত্পাদিত পরিবাহী কাচের শীট ইত্যাদি ইলেকট্রনিক উপাদান ব্যবহার করে, এআই ও ঐতিহ্যগত উত্পাদন সংযুক্তির নতুন প্রবণতা দেখায়। কোম্পানির ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছেন সি বলেন, দ্রুত পরিবর্তিত বাজারের সামনে, কোম্পানি অধিকতরভাবে গবেষণা-উন্নয়ন বরাদ্দ বাড়াবে।
আন্তর্জাতিক বাজার পরিবর্তন মোকাবিলা করতে চীনা প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান ইতিবাচকভাবে বাজার বন্টন সমন্বয় করে, বিদেশে নবোদিত বাজার এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে একই সাথে প্রচেষ্টা চালায়। পরিষেবা রোবট ক্ষেত্রে শাংহাই কিনন ইন্টেলিজেন্ট টেকনোলজি কোং, লিমিটেডের পণ্য ৬০টির বেশি দেশে পৌঁছে গেছে। প্রতিষ্ঠানের বাজার বিভাগের পরিচালক ছেন ছিয়ান বলেন, “জাপানি ও দক্ষিণ কোরীয় বাজারে পরিষেবা রোবটের গ্রহণ হার ইউরোপ ও আমেরিকার চেয়ে উঁচু। জাপানি ও দক্ষিণ কোরীয় শিশুরা ‘ডোরেমন’ দেখে বড় হয়। তারা মনে করেন, রোবট মানবজাতির বন্ধু।” ব্যবসা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় বাজারে আয়ের বৃদ্ধি যথাক্রমে ২৪০, ১০০ ও ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
“যুক্তরাষ্ট্র ছিল আমাদের বৃহত্তম হার্ডওয়্যার রপ্তানি বাজার”। জান ওয়েন ইয়ু “সূর্যোদয়ের সময় হারানো আর সূর্যাস্তের সময় লাভ করা” এমন কথায় কোম্পানির বাজার কৌশল সমন্বয় বর্ণনা করেন। কোম্পানি ইতিবাচকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মধ্য-প্রাচ্যের মতো নবোদিত বাজার সম্প্রসারণ করে। অনুবাদ যন্ত্র ও অভিধান কলম ইত্যাদি স্মার্ট পণ্য সৌদি আরব ও হাঙ্গারিসহ দশ-বারটি দেশে প্রবেশ করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লিংবান টেকনোলজি’র এআর স্মার্ট চশমা শুধু পণ্যভোগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় হয়ে উঠে তা নয়, বরং শিল্প পরিদর্শন ও পুলিশি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে এর ব্যবহার হয়। ছেন সি বলেন, চীন-মার্কিন বাণিজ্যিক বিরোধ প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক পরিসেবার ওপর কিছু প্রভাব ফেলে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান সরবরাহ চেইন কাঠামো সুবিন্যস্ত করা ও স্থানীয়তার উপযোগী দক্ষতা উন্নীত করাসহ বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে তা মোকাবিলা করছে। তাঁর মতে, চীনের বিশাল জনসংখ্যার মানে স্মার্ট চশমার মতো পরিধেয় পণ্য স্থানীয় বাজার বিশাল বৃদ্ধির স্পেস পাবে।
“যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক প্রভাব আছে, তবু বেশি চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই।” ইহাং ইন্টেলিজেন্ট টেকনোলজি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ওয়াং জাও বলেন, গত বছর কোম্পানির স্বয়ংচালিত আকাশযান আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসে। উত্পাদন মাত্রা সম্প্রসারণ করার সঙ্গে সঙ্গে উত্পাদন মূল্য যথাক্রমে কমবে, যা কার্যকরভাবে বিদেশি শুল্ক ডেকে আনে প্রভাবকে প্রশমিত করবে। বর্তমানে ইউরোপ, লাতিন-আমেরিকা, মধ্য-প্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বহু দেশে আকাশযানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন হয়েছে। নবোদিত বাজার থেকে এটি খুবই ভাল প্রতিক্রিয়া পাচ্ছে। (Source: CGTN)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন