রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালির দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুহাঙ্গা-ন্যাঙ্গে মহাসড়ক। পথের এক পাশে মহিমান্বিত সবুজ পাহাড় এবং অন্য দিকে খাড়া খাড়া পাহাড়, দৃশ্যপট মহিমাময়। এক বছরের বেশি সময় আগে, পথটি এবড়োখেবড়ো, ধূলাবালিতে ভরা ও অত্যন্ত এলোমেলো ছিল। কিন্তু এখন রাজপথের পৃষ্ঠ মসৃণ এবং সুশৃঙ্খল। সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনের প্রকল্প ম্যানেজার চিয়াং পেং ফেই জানান, প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয়। মেয়াদ ২৪ মাস। বর্তমানে প্রকল্প স্থিতিশীলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রকল্প সম্পন্ন করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থানীয় অধিবাসীদের জন্য যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাবেন। দেশটির পশ্চিম প্রদেশে অবস্থিত প্রকল্পটির দৈর্ঘ্য ২৯ কিলোমিটার। এটি দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর প্রদেশকে সংযুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন করিডোর। প্রকল্পের বরাবর ভূখণ্ড জটিল, নির্মাণ কাজের চ্যালেঞ্জ বেশি। প্রকল্পে রয়েছে পথ মেরামত ও সম্প্রসারণ, লক্ষ্য হলো এ অঞ্চলের পরিবহন কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা উন্নীত করা। নির্মাণ সাইটে দেখা যাচ্ছে, পথে স্পিড বাম্প স্থাপন করা হয়, যাতে তীব্র বাঁক ও সামনে খাড়া পথ বেয়ে নামার সম্ভাব্য ঝুঁকি দূর করা যায়। অন্য দিকে, রাস্তার বাতি, ফুটপাত ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক সরঞ্জামও অব্যাহতভাবে পূর্ণাঙ্গরূপে গড়ে তোলা হচ্ছে।
চিয়াং পেং ফেই বলেন, মহাসড়কটি পুরোপুরিভাবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নকশা করা হয়, বিশেষ করে, বাঁক সুবিন্যস্ত করতে অনেক চেষ্টা চালানো হয়। বাঁকের ব্যাসার্ধ বাড়ানোর মাধ্যমে দিগন্ত প্রসারিত হয়, ফলে পরিবহন দুর্ঘটনা ঘটার হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়।
জানা গেছে, রাজপথটি চালু হবার পর রাজধানী কিগালি থেকে পর্যটন শহর কিবুয়ে পর্যন্ত পরিবহন সময় বাঁচানোর পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রুসিজি জেলায় উত্পাদিত সিমেন্টের মতো সরঞ্জাম আরো সুষ্ঠুভাবে মুহাঙ্গা শিল্প পার্কে পাঠানো হবে। কিগালি থেকে মানবিক ত্রাণ সামগ্রিও আরো দ্রুতভাবে নিকটবর্তী দেশের শরণার্থীদের গ্রহণ করা কিজিবা শরণার্থী শিবিরে পৌঁছানো যায়। তাছাড়া প্রকল্পটি ৪শ’র বেশি স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। সিনোহাইড্রো’র স্থানীয় কর্মী ফ্যাব্রিস এনগেনজি বলেন, “বিগত কয়েক বছর আমি অনেক প্রযুক্তি শিখে ফেলেছি। এখন স্থিতিশীল আয় আছে এবং বাড়ি ও গাড়ি কিনেছি। বিয়েও করেছি। চীনা প্রতিষ্ঠান আমাদের জন্য চাকরি সুযোগ সৃষ্টি করার পাশাপাশি ব্যবহারিক প্রযুক্তি নিয়ে আসছে। আরো বেশি চীনা প্রতিষ্ঠান এখানে আসার প্রত্যাশা করি। রুয়ান্ডার অনেক মানুষের হৃদয়ে, রাজপথটি শুধু গাড়ি প্রবাহ ও মালামাল বহন করে তা নয়, বরং জীবিকা ও স্বপ্ন, যা স্থানীয় উন্নয়নের জন্য আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন