অক্সফামের প্রতিবেদনঃ ২০১৯ সালের পর শ্রমিকের চেয়ে সিইওদের বেতন বেড়েছে ৫৬ গুণ – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন

অক্সফামের প্রতিবেদনঃ ২০১৯ সালের পর শ্রমিকের চেয়ে সিইওদের বেতন বেড়েছে ৫৬ গুণ

  • ০৪/০৫/২০২৫

বিশ্বজুড়ে সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের গড় বেতন ২০১৯ সালের পর ৫০ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে একই সময়ে শ্রমিকের গড় মজুরি বেড়েছে মাত্র দশমিক ৯ শতাংশ। বিশ্বজুড়ে সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের গড় বেতন ২০১৯ সালের পর ৫০ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে একই সময়ে শ্রমিকের গড় মজুরি বেড়েছে মাত্র দশমিক ৯ শতাংশ। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ বৈষম্য তুলে ধরেছে অক্সফাম। খবর ইউরো নিউজ।
সংস্থাটি ৩৫টি দেশের দুই হাজার কোম্পানিকে নিয়ে এ সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালে যেসব কোম্পানির সিইওরা বছরে ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ ডলারের বেশি আয় করেছেন, তাদের গড় আয় বেড়েছে অনেক বেশি। এর বিপরীতে শ্রমিকদের আয় প্রায় স্থির রয়ে গেছে। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি বেতন পান আয়ারল্যান্ড ও জার্মানির সিইওরা। গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে আয়ারল্যান্ডে সিইওদের গড় আয় ছিল ৬৭ লাখ ডলার (প্রায় ৫৯ লাখ ইউরো) ও জার্মানিতে ৪৭ লাখ ডলার (প্রায় ৪১ লাখ ইউরো)। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার সিইওরা ২০২৪ সালে গড়ে ১৬ লাখ ডলার (১৪ লাখ ইউরো) আয় করেছেন এবং ভারতের সিইওদের গড় আয় ছিল ২০ লাখ ডলার (১৭ লাখ ইউরো)।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক অমিতাভ বেহার বলেন, ‘বছর ঘুরে আবার সেই একই কদর্য দৃশ্য। সিইওদের বেতন বাড়ছে হুহু করে, আর শ্রমিকদের মজুরি এক জায়গায় পড়ে আছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এটা কোনো ভুল নয়। ব্যবস্থাটি ঠিক এভাবেই তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সম্পদ ওপরের দিকে সরে যায়। আর কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষ ঘরভাড়া, খাবার ও স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খায়।’ সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে সিইওর বার্ষিক আয় ১ কোটি ডলারের বেশি এবং লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশিত ছিল, সেখানেও বড় রকমের বৈষম্য বিদ্যমান। ৪৫ হাজার ৫০১ জন সিইওর মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ ছিলেন নারী। আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের (আইটিইউসি) মহাসচিব লুস ট্রায়াঙ্গেল বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করপোরেশনগুলো যখন রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করছে, কর ফাঁকি দিচ্ছে ও দায়বদ্ধতা এড়াতে লবিং চালাচ্ছে তখনই শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’ অক্সফামের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বের ধনকুবেররা, যারা অনেক ক্ষেত্রেই এসব বৃহৎ কোম্পানির মালিক বা অংশীদার, তারা গত এক বছরে গড়ে ২০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার (প্রায় ১৮ হাজার ২৭০ কোটি ইউরো) নতুন সম্পদ অর্জন করেছেন। ঘণ্টাপ্রতি হিসাব করলে তা দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৫০০ ডলার, যা ২০২৩ সালের বৈশ্বিক গড় আয় ২১ হাজার ডলারের চেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে প্রকৃত মজুরি গড়পড়তায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। তবে ফ্রান্স, দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্পেনে এ বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ। বৈশ্বিক মজুরি বৈষম্য সামান্য কমলেও তা এখনো নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় প্রকট। সেসব দেশে সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর আয়ের অংশ সবচেয়ে দরিদ্র ৪০ শতাংশের আয়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৪ গুণ বেশি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us