বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন গত মাসে বেড়েছে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের (ওয়ার্ল্ড স্টিল) প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের ৬৯টি দেশ মার্চে মোট ১৬ কোটি ৬১ লাখ টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। খবর হেলেনিক শিপিং নিউজ। উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মোট অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনে এ ৬৯ দেশের প্রায় ৯৮ শতাংশ হিস্যা রয়েছে।
অঞ্চলভিত্তিক উৎপাদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে আফ্রিকার দেশগুলো মোট ১৯ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এ সময় এশিয়া ও ওশেনিয়ার দেশগুলোয় উৎপাদন বেড়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। মোট উৎপাদন পৌঁছেছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ টনে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীন বিশ্বের শীর্ষ ধাতবপণ্য উৎপাদনকারী। নির্মাণ খাতের কার্যক্রম ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা নিম্নমুখিতার কারণে দেশটিতে ইস্পাত উৎপাদন কমে গিয়েছিল। তবে চীন সরকারের অর্থনৈতিক প্রণোদনায় সম্প্রতি পরিস্থিতির পুনরুদ্ধার ঘটে। মার্চে দেশটিতে ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময় চীনে মোট উৎপাদন পৌঁছেছে ৯ কোটি ২৮ লাখ টনে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মুনাফার হার বৃদ্ধি ও রফতানির গতি অব্যাহত থাকা এ সময় উৎপাদন বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রেখেছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এপ্রিলে উৎপাদন স্থিতিশীল অথবা কমে যেতে পারে। এতে ভূমিকা রাখবে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাড়তে থাকা বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে রফতানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা নিয়ে অনিশ্চয়তা। বিশ্বে শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। দেশটিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও অটোমোবাইল খাতে ধাতবপণ্যটির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। মার্চে দেশটির মোট উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি।
জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ। তবে নির্মাণ ও উৎপাদন খাতে নিম্নমুখী চাহিদার কারণে সম্প্রতি দেশটিতে ধাতবপণ্যটির উৎপাদন কমেছে। দেশটিতে মার্চে ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে মাত্র দশমিক ২ শতাংশ। এ সময় মোট উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৭২ লাখ টনে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশ মার্চে ইস্পাত উৎপাদন করেছে ১ কোটি ১৭ লাখ টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ২ শতাংশ বেশি। তবে এ সময় ইউরোপের অন্যান্য দেশে উৎপাদনে হ্রাস দেখা গেছে। ওইসব দেশে মোট উৎপাদন ৭ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৩৬ লাখ টনে নেমে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যে উৎপাদন ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৫৩ লাখ টনে পৌঁছেছে। উত্তর আমেরিকায় উৎপাদন হয়েছে ৯২ লাখ টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। এ সময় রাশিয়া ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশ এবং ইউক্রেনে উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে ৭১ লাখ টনে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কম। দক্ষিণ আমেরিকায় উৎপাদন ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৩৭ লাখ টন হয়েছে।
মন্তব্য করুন