ছ’মাসে সর্বনিম্ন! কমতে কমতে তিন শতাংশেরও নীচে নামল ভারতের শিল্পোৎপাদন – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

ছ’মাসে সর্বনিম্ন! কমতে কমতে তিন শতাংশেরও নীচে নামল ভারতের শিল্পোৎপাদন

  • ১৩/০৪/২০২৫

সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের বক্তব্য, সরকারের তরফে দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির কথা বলা হলেও চাহিদা এখনও শ্লথ। যে কারণে গতি পাচ্ছে না উৎপাদন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে শিল্পোৎপাদন বেড়েছিল ৫.৬% হারে।
শক্ত হাতে আন্তর্জাতিক অস্থিরতা সামলানোর জন্য সব থেকে আগে দেশীয় অর্থনীতিকে মজবুত করার বার্তা দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব মহলই। তবে বাস্তবে তা আদৌ কতটা সম্ভব হচ্ছে, তাই নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গেল। শুক্রবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান জানাল, ফেব্রুয়ারিতে দেশে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার নেমে গিয়েছে ২.৯ শতাংশে। যা ছ’মাসের মধ্যে সব থেকে কম। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে শিল্পোৎপাদন বেড়েছিল ৫.৬% হারে। আর গত জানুয়ারিতে ৫.২%।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের বক্তব্য, সরকারের তরফে দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির কথা বলা হলেও চাহিদা এখনও শ্লথ। যে কারণে গতি পাচ্ছে না উৎপাদন। অনেকে এ জন্য সাধারণ মানুষের হাতে বাড়তি টাকার অভাব, প্রয়োজনীয় সব পণ্য এবং পরিষেবার বেড়ে যাওয়া দাম, বেকারত্ব ইত্যাদিকেও দায়ী করছেন। সরকারি পরিসংখ্যানেও সেই সমস্যার আভাস। ফেব্রুয়ারিতে মন্থর হয়েছে কল-কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির হার। আগের বছর এই সময় ছিল ৪.৯%। এ বছর নেমেছে ২.৯ শতাংশে। এই ক্ষেত্রের উন্নতি কর্মসংস্থানের জন্য জরুরি। খননে উৎপাদন ৮.১% হারে বেড়েছিল গত বার। এ বছর কমে গিয়েছে ১.৬%। বিদ্যুতেও দেখা গিয়েছে শ্লথ ভাব। ভোগ্যপণ্য প্রত্যাশার অনেকটা নীচে।
দেশে চাহিদার সমস্যা মেরামত করার জন্য বাজেটে করদাতাদের বিপুল ছাড় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। খুচরো মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামানোয় ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিলের ঋণনীতিতে টানা দু’বার সুদ কমিয়ে ঋণগ্রহীতাদের খরচের বোঝা কমানোর চেষ্টা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলেন, “সারা বিশ্বের মতো এ দেশেও চাহিদার সমস্যা রয়েছে। ফলে তার প্রভাব পড়েছে শিল্পোৎপাদনের হারে। মূলত চাহিদা কম থাকার কারণেই এই হাল।” অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারেরও বক্তব্য, ‘‘এই প্রবণতা শুধু ভারতের নয়। সারা বিশ্বের সমস্যা এটা। অর্থনীতি এখন সারা বিশ্বের উপর নির্ভরশীল। আর বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধি নানা কারণে শ্লথ। তারই প্রভাব ভারতেও পড়েছে।’’ তবে তিনি জানাচ্ছেন, শিল্পবৃদ্ধিতে ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির প্রভাবও পড়েছে। পাশাপাশি, তিনি পরিষেবা ক্ষেত্রের বৃদ্ধির বিষয়টিকে আলাদা করে গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ ভারত চিরাচরিত ভাবে উৎপাদন ক্ষেত্রে ততটা এগিয়ে নয়, যতটা এগিয়ে পরিষেবায়।
পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের অবশ্য দাবি, ‘‘ফেব্রুয়ারির এমন ঝিমিয়ে পড়া শিল্পবৃদ্ধির কারণ মূলত লিপ ইয়ারের নিরিখে হিসাব করার প্রভাব। বিদ্যুৎ এবং কারখানায় উৎপাদন ক্ষেত্রের দুর্বলতাও কাজ করেছে।’’
রাজেন্দ্রর আশঙ্কা, শুল্ক এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা আগামী কয়েক মাসও কল-কারখানার উৎপাদনকে টেনে নামাতে পারে। এই অবস্থায় ভারতকে খুঁজতে হবে রফতানি বাড়িয়ে কঠিন সময় পেরনোর পথ।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us