ফলন ভালো হওয়ায় সম্প্রতি গমের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে শীর্ষ রফতানিকারক দেশ রাশিয়ায় গত সপ্তাহে স্থিতিশীল ছিল গমের রফতানি মূল্য। দেশটিতে সরবরাহ এখনো সীমিত থাকায় পণ্যটির দাম স্থিতিশীল ছিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা জানিয়েছেন, দাম কমতির দিকে থাকায় আপাতত মজুদ ধরে রাখছেন রাশিয়ার কৃষকরা।
আইকেএআর কনসালট্যান্সি অনুসারে, আগস্টের শেষে সরবরাহের জন্য গত সপ্তাহে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিনযুক্ত রুশ গমের টনপ্রতি ফ্রি অন বোর্ড (এফওবি) মূল্য ছিল ২১৯ ডলার। গত সপ্তাহেও একই দামে গম রফতানি করেছে রাশিয়া।
গবেষণা সংস্থা সোভেকন গত সপ্তাহের শেষের দিকে দ্রুততম সময়ে সরবরাহের জন্য একই মানের প্রতি টন গমের দাম ২২০-২২২ ডলার নির্ধারণ করেছিল। এর আগের সপ্তাহে এফওবিতে যার দাম ছিল টনপ্রতি ২১৯-২২২ ডলার।
সোভেকন বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, রাশিয়ার বন্দরে গমের দাম কম। তাই বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা বিক্রির জন্য তাড়াহুড়ো করছেন না।’
রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম গম রফতানিকারক দেশ। গত সপ্তাহে দেশটি মোট ৭ লাখ ১০ হাজার টন শস্য রফতানি করেছে, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ছয় লাখ টন। গত সপ্তাহে রফতানীকৃত শস্যের মধ্যে শুধু গমই রফতানি করেছে ৬ লাখ ৬০ হাজার টন, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫ লাখ ১০ হাজার টন।
আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে চলতি মৌসুমে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েক সপ্তাহ আগে ফসল কাটা শুরু করেছিল রাশিয়া। সোভেকনের মতে, ১২ জুলাই পর্যন্ত দেশটির কৃষকরা ৮৪ লাখ হেক্টর জমি থেকে ৩ কোটি ২০ লাখ টন শস্য সংগ্রহ করেছেন। গত বছর ৩৩ লাখ হেক্টর জমি থেকে মোট ১ কোটি ২২ লাখ টন শস্য সংগ্রহ করেছিলেন তারা। এ হিসাবে চলতি মৌসুমে হেক্টরপ্রতি শস্যের গড় ফলন হয়েছে ৩৮ লাখ টন, যা গত বছর ছিল ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টন।
এছাড়া চলতি মৌসুমে মোট শস্যের মধ্যে রাশিয়া সাত লাখ হেক্টর জমি থেকে গম সংগ্রহ করেছে ২ কোটি ৭৪ লাখ টন। গত বছর ১৯ লাখ হেক্টর জমি থেকে ৭৩ লাখ টন গম সংগ্রহ করেছিল দেশটি। এ হিসাবে চলতি মৌসুমে হেক্টরপ্রতি গমের ফলন হয়েছে ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টন, যা গত বছর ছিল ৩৮ লাখ ৩০ হাজার টন।
গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও কৃষিপণ্যটির রফতানিতে একক আধিপত্য ধরে রেখেছে রাশিয়া। এ খাতে দেশটির ধারেকাছেও নেই অন্য কেউ। ফলে রফতানি বাজারে রুশ আধিপত্য আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে গমের দাম নির্ধারণে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা কারণে রাশিয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হলে কিংবা যেকোনো কারণে দেশটি থেকে রফতানি বাড়লে বা কমলে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দামে উত্থান-পতন দেখা যায়। এ পরিস্থিতি বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের বাজারে রাশিয়াকে শক্তিশালী ফ্যাক্টর হিসেবে ভূমিকা রাখতেও উৎসাহিত করে। (সূত্র: বিজনেস রেকর্ডার)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন