ক্রেতাদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতায় জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (জেনএআই) গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে। ৭১ শতাংশ ক্রেতা তাদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতায় প্রযুক্তিটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে চান। জেন-জি ও মিলেনিয়ালদের মতো তুলনামূলক তরুণ সমাজের আগ্রহের কারণে এ পরিবর্তন আসছে। তারা মূলত কেনাকাটার ক্ষেত্রে কাস্টমাইজড ও সহজ ডিজিটাল অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। ক্যাপজেমিনি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। খবর টেক মনিটর।
গবেষণাটি ২০২৪ সালের শেষে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়া-প্যাসিফিকের ১২টি দেশে পরিচালিত হয়। এতে ১৮ বছর ও এর বেশি ১২ হাজার জন ভোক্তার ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।
ক্যাপজেমিনির গ্লোবাল রিটেইল প্রধান লিন্ডসে মাজা বলেন, ‘বর্তমানে ভোক্তারা এআই ও জেনএআইয়ের সাহায্যে উন্নত করা কাস্টমাইজড কেনাকাটার অভিজ্ঞতা চাচ্ছেন। এছাড়া তারা দ্রুত ও কার্যকরী ডেলিভারির প্রত্যাশা করে থাকেন। এভাবে তারা তাদের কেনাকাটার প্রভাব সম্পর্কে আরো সচেতন হয়ে উঠছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ও গ্রাহকের আনুগত্য তৈরি করতে খুচরা বিক্রেতাদের ভোক্তার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। পাশাপাশি মসৃণ ও দুর্দান্ত শপিংয়ের অভিজ্ঞতা তৈরি করতে এআই ব্যবহারের মাধ্যমে মিথস্ক্রিয়া বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেনাকাটার দিকে ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপও গুরুত্বপূর্ণ। খুচরা বিক্রেতাদের তাদের কেনাকাটার যাত্রার শুরুতে গ্রাহকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা উচিত।’
কেনাকাটায় জেনএআইয়ের ব্যবহার বাড়ছে। জরিপে অংশ নেয়া ক্রেতাদের ৪৬ শতাংশ অনলাইন খুচরা বিক্রিতে এর ভূমিকা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। ৭৫ শতাংশ উত্তরদাতা জেনএআই থেকে সুপারিশ গ্রহণ করতে আগ্রহী, যা ২০২৩ সালের ৬৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ৫৮ শতাংশ ভোক্তা পণ্য বা পরিষেবার সুপারিশ খুঁজতে সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনের পরিবর্তে জেনএআই টুল ব্যবহার করেন। তথ্য একত্র করতে পারে এমন এআইনির্ভর টুলগুলোর প্রতিও পছন্দ বাড়ছে। ৬৮ শতাংশ ভোক্তা এমন সমাধান পছন্দ করেন, যেখানে অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন, সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ও রিটেইলার ওয়েবসাইট থেকে সার্চের ফলাফল একত্র করা হয়। এ অগ্রযাত্রা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে জেনএআই বাস্তবায়নে ভোক্তাদের সন্তুষ্টি সামান্য কমেছে, যা ২০২৩ সালে ৪১ শতাংশ থেকে কমে ৩৭ শতাংশ হয়েছে। ভোক্তারা কীভাবে পণ্যের অনুসন্ধান করবেন, তার নতুন রূপ দিচ্ছে এআই ও সোশ্যাল মিডিয়া। ভার্চুয়াল অ্যাভাটারের মতো এআইনির্ভর ইনফ্লুয়েন্সার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কেনাকাটার ক্ষেত্রে এসব মাধ্যম থেকে ২৫ শতাংশ ভোক্তা সুপারিশ নিয়ে থাকেন। জেন-জিদের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব অনেক বেড়েছে। পণ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ২০২৪ সালে ৭০ শতাংশ ব্যবহারকারী ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো প্লাটফর্ম ব্যবহার করেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৪৫ শতাংশ। গ্রাহকসেবার জন্যও সোশ্যাল মিডিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। সহযোগিতা ও সমস্যার সমাধানে ৪০ শতাংশ ব্যবহারকারী এ প্লাটফর্মগুলো ব্যবহার করে থাকেন। এ প্রবণতার মাধ্যমে বোঝা যায় যে খুচরা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যেসব কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেসব ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৭ শতাংশ ভোক্তা তাদের পণ্য খোঁজার সময় খুচরা বিক্রেতার ওয়েবসাইট বা অ্যাপে বিজ্ঞাপন লক্ষ্য করেন। গত বছরে অনলাইন বিজ্ঞাপনগুলো অনলাইন কেনাকাটার প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে প্রভাবিত করেছে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন