ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন জুনে হ্রাস পেয়েছে। দেশগুলোর উত্তোলন নেমেছে ১১ মাসে সর্বনিম্নে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্লাটস কমোডিটি ইনসাইটসে প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্লাটস জরিপ অনুসারে, জুনে ওপেক প্লাস অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক ১ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল কমিয়েছে। এ সময় দেশগুলো জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে দৈনিক ৪ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল।
এর মধ্যে জুনে অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিভুক্ত (ওপেক) দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক ১০ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। মোট উত্তোলন পৌঁছেছে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে। অন্যদিকে ওপেক-বহির্ভূত দেশগুলোর উত্তোলন দৈনিক ১ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল কমে ১ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে নেমেছে।
ওপেক-বহির্ভূত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তোলন কমিয়েছে রাশিয়া। জুনে জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক ১ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল কমিয়েছে দেশটি। উত্তোলন নেমেছে দৈনিক ৯১ লাখ ব্যারেলে, যা ২০২০ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন। যদিও এ সময় রাশিয়ার উত্তোলন ওপেক প্লাসের বেঁধে দেয়া কোটা থেকে দৈনিক ৮৯ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল বেশি ছিল।
অন্যদিকে জুনে ওপেকের কোটাভুক্ত দেশগুলো নির্ধারিত কোটা থেকে দৈনিক ২ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে, মে মাসে যা ছিল দৈনিক ২ লাখ ৩৯ হাজার ব্যারেল।
এর মধ্যে ইরাক দৈনিক ৬০ হাজার ব্যারেল উত্তোলন কমিয়ে দৈনিক ৪২ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে নামিয়েছে। কাজাখস্তান উত্তোলন বাড়িয়েছে দৈনিক ৫০ হাজার ব্যারেল। এ সময় দেশটি মোট ১৫ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে।
ওপেক প্লাসের চুক্তির বিপরীতে একটি সদস্য দেশ কোনো মাসে অতিরিক্ত উত্তোলন করলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেশটিকে পরের মাসে একই হারে উত্তোলন কমাতে হয়। চলতি বছরের শুরুতে ইরাক, কাজাখস্তান ও রাশিয়া অতিরিক্ত উত্তোলনের জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার পরিকল্পনা জুনের শেষে জমা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কাজাখস্তান গত সোমবার জানিয়েছে, জ্বালানি তেল উত্তোলনের মাধ্যমিক উৎস জুনের ডাটা প্রকাশের পর তারা ওপেক সচিবালয়ে তাদের পরিকল্পনা জমা দেবে। ইরাকের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে জানিয়েছেন, তাদের প্রতিনিধি দল ওপেক সচিবালয়ের সঙ্গে ক্ষতিপূরণ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছে। তবে রাশিয়া এ পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য জানায়নি।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দীর্ঘ সময় ধরেই ওপেকভুক্ত দেশগুলো উত্তোলন কমাচ্ছে। জুনে তা আরো কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সময় ওপেক প্লাসের বৈঠকে আগেকার বিভিন্ন উত্তোলন হ্রাসের ঘোষণার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্লাটস মূল্যায়ন অনুসারে, গত সোমবার ব্রেন্টের দাম ১ জুলাইয়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি ছিল। প্রতি ব্যারেলের মূল্য পৌঁছেছে ৮৭ ডলার ৭৩ সেন্টে। (সূত্র:রয়টার্স)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন