২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য করা চুক্তির মধ্যস্থতা করার অভিযোগ উঠেছে সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। এই মধ্যস্ততা করার সময় প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়িয়ে ধরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। তবে এবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে নির্দোষ বলে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে করা চুক্তির মধ্যস্থতা করার অভিযোগ উঠেছে টিউলিপের বিরুদ্ধে। এ মধ্যস্ততা করার সময় প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়িয়ে ধরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
তবে টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ থেকে মুক্তি চেয়েছেন। ডাউনিং স্ট্রিট তার প্রতি দৃঢ় সমর্থনের প্রস্তাব দিলেও, সাবেক পরিবহনমন্ত্রী লুইস হাইয়ের অপ্রত্যাশিত পদত্যাগসহ নানা অশান্তির মধ্যে টিউলিপের এই বিষয়টি কিয়ার স্টারমারের চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভরা দ্রুত এ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে এটিকে কিয়ার স্টারমারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নতুন ‘কলঙ্ক’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। গত আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে শেখ হাসিনা ১৫ বছরেরও বেশি সময় দেশ শাসন করেছেন। এ সময় তার সরকারের বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদ, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি এবং তার মন্ত্রীদের সবার বিরুদ্ধে এখন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত চলছে। বর্তমানে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে তারই আওতায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে ওই চুক্তি সই করা হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের ছবিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টিউলিপ ও শেখ হাসিনাকে দেখা যায়। টিউলিপ আগে থেকেই ভুল বা অন্যায় কিছু করার কথা অস্বীকার করে আসছেন এবং জোর দিয়ে বলছেন যে এ অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি ‘পারিবারিক অনুষ্ঠান’র অংশ মাত্র।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানান, সিদ্দিকের প্রতি তাদের প্রধানমন্ত্রীর (স্টারমার) পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সিদ্দিক দুর্নীতি মোকাবিলায় ভূমিকা পালন করেছেন বলেও জানান তিনি।
মুখপাত্র বলেন, ‘টিউলিপ কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন এবং আমি বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন বা প্রমাণ না হওয়া বিষয়ে মন্তব্য করতে পারি না। গত মাসে প্রকাশিত এক নথিতে দেখা গেছে, সেখানে টিউলিপ উল্লেখ করেছেন তার খালা (শেখ হাসিনা) ‘আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।’
স্টারমারের মুখপাত্র বলছেন, টিউলিপ বাংলাদেশ সম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। ২০১৩ সালের চুক্তিতে সিদ্দিকের সংশ্লিষ্টতা স্বার্থের সংঘাত তৈরি করেছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘টিউলিপ দায়িত্ব গ্রহণের আগের ঘটনাগুলোর বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব না।’
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন