প্লাস্টিক দূষণে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘের এক চুক্তির আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে ভেস্তে গেছে। মূলত নতুন প্লাস্টিক উৎপাদনের সীমা নির্ধারণে ১০০টি দেশের প্লাস্টিক ট্রিটির প্রচেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলো। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়ার বাধা ছিল উল্লেখ করার মতো।
এফটির প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিত পঞ্চম দফার আলোচনাটি এখন অনির্ধারিত ভবিষ্যতে সম্প্রসারণ হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে বহুপক্ষীয় সংস্থা জাতিসংঘের উদ্যোগের মাঝে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এটি গত এক মাসে তৃতীয় জাতিসংঘ ফোরাম, যেখানে আলোচনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাধার মুখে পড়েছে। এর আগে কলম্বিয়ার ক্যালিতে জাতিসংঘের বায়োডাইভারসিটি সামিট অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোয় স্থগিত হয়। এরপর আজারবাইজানের বাকুতে কপ২৯-এ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা পরবর্তী বছরের দিকে গড়িয়েছে।
জাতিসংঘের প্লাস্টিক চুক্তি আলোচনার চূড়ান্ত প্লেনারিতে ইকুয়েডরের চেয়ার লুইস ভায়াস ভালদিভিয়েসো বলেন, ‘স্বীকার করতে হবে যে আমরা এখনো প্রচেষ্টার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। যদিও চূড়ান্ত গন্তব্য এখন দৃষ্টিসীমার মধ্যে রয়েছে, যাত্রা তখনই শেষ হবে, যখন আমরা সফলভাবে লক্ষ্য অর্জন করব।’
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ওয়ালমার্ট, ইউনিলিভার ও নেসলের মতো দুই শতাধিক বৃহৎ বৈশ্বিক ভোক্তাপণ্য বিক্রেতা গোষ্ঠী একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধ করার পক্ষে রয়েছে। তাদের মতে, ভবিষ্যতে বর্জ্য পরিষ্কারের মতো আর্থিক বোঝা না টেনে বর্তমানেই টেকসই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
পরামর্শক সংস্থা গ্লোবাল প্লাস্টিকস ট্রিটি ফর আ বিজনেস কোয়ালিশন বলেছে, একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ফলের কাছাকাছি আসা গেছে মনে হয়েছিল। কোয়ালিশনের সহপ্রধান জন ডানকানের মতে, ছোট একটি গোষ্ঠীর কারণে বহুপক্ষীয় আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এমন ধীর গতি দেখা হতাশাজনক।
গবেষণা অনুসারে, এ শতকের মাঝামাঝিতে বৈশ্বিক প্লাস্টিকের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হবে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) পূর্বাভাস দিয়েছে প্লাস্টিকের জন্য পেট্রোলিয়ামভিত্তিক কাঁচামাল এ দশকের শেষার্ধে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির মূল চালক হবে।
প্লাস্টিক উৎপাদনের সীমা নির্ধারণে চুক্তির আলোচনায় ১০০টি দেশ সমর্থন করেছিল। ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার পক্ষে ১৪০টি দেশ সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু সৌদি আরব ও রাশিয়ার মতো জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর ছোট একটি দল প্লাস্টিক উৎপাদন কমানোয় কোনো লক্ষ্য নির্ধারণের বিরোধিতা করেছিল। এ বিষয়ে সৌদি আরবসহ সমমনা দেশগুলোর পক্ষে ইরানের প্রধান আলোচক জানান, বিতর্কিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরো সময় ও আলোচনার প্রয়োজন।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন