কী করতে চলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভস – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩১ অপরাহ্ন

কী করতে চলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভস

  • ০৮/০৭/২০২৪

যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি নিয়ে হতাশা ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দেশটির নতুন অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভস। তাঁর কথায়, রক্ষণশীল দলের শাসনামলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ক্ষয়ে গেছে; এখন সেই ক্ষয়ে যাওয়া অর্থনীতির উত্তরাধিকার লেবার পার্টিকে বহন করতে হবে। এটা নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ।
বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে র‌্যাচেল রিভস বলেন, ‘আমাদের হাতে বেশি অর্থ নেই; কী পরিমাণ চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে আমাকে এই দায়িত্ব নিতে হচ্ছে, আমি তা জানি।’ এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর উপায় সম্পর্কেও বলেছেন অর্থমন্ত্রী। জানিয়েছেন, ঘাটতি পূরণে তিনি বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করবেন।
রিভস বলেন, ‘বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সফল অর্থনীতির প্রাণ; সে জন্য আমাদের বেসরকারি বিনিয়োগের অর্গল খুলতে হবে।’
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ১৪ বছর পর লেবার পার্টি জয়লাভ করেছে। ভূমিধস বিজয় লাভ করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন স্যার কিয়ার স্টারমার।
কনজারভেটিভ পার্টির ভরাডুবি হয়েছে নির্বাচনে। লেবার পার্টি প্রয়োজনীয় আসনের চেয়ে ১৭৪টি আসন বেশি পেয়েছে।
নির্বাচনে আগে অর্থাৎ বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। জানুয়ারি–মার্চ সময়ে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। এমনকি তা প্রাথমিক হিসাবও ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্থ হলো বছরের প্রথম প্রান্তিকে জি–৭ ভুক্ত ধনী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
গত বছরের শেষ প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছিল। এবার প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে তারা সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে অনেক পরিবারই চাপে আছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। দেশটির নীতি সুদহার এখন গত ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই পরিস্থিতিতে ঋণ ও বন্ধকের ব্যয় বেড়ে গেছে, যদিও সঞ্চয়কারীদের সুবিধা হয়েছে। তাঁরা বেশি সুদে সঞ্চয় করতে পারছেন।
বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রথম মাস অর্থাৎ এপ্রিলে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ হয়নি। সিক্ত আবহাওয়ার কারণে মানুষের বাইরে যাওয়া ও কেনাকাটা কমে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে নির্মাণকাজের গতিও কমে যায়। স্বাভাবিকভাবে জিডিপিতে তার প্রভাব পড়েছে।
র‌্যাচেল রিভস বলেছেন, লেবার পার্টির অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মূলে আছে পরিকল্পনা–ব্যবস্থার সংস্কার।
নির্বাচনে লেবার পার্টি ১৫ লাখ বাড়ি ও জ্বালানি অবকাঠামো নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পরিকল্পনা- ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। এই প্রক্রিয়ায় গতি আনার সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে যেন বিনিয়োগ আটকে না যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তিনি।
গত ১৪ বছরে যুক্তরাজ্যে পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন অর্থমন্ত্রী হয়েছেন সাতজন। সেই সঙ্গে উন্নয়নের পরিকল্পনা হয়েছে ১২টি। র‌্যাচেল রিভস মনে করেন, প্রতিটি পরিকল্পনাই ছিল আগের পরিকল্পনার চেয়ে নিকৃষ্ট। তাঁর মতে, স্থিতিশীলতার সঙ্গে বিনিয়োগও দরকার।
র‌্যাচেল রিভস ব্রিটেনের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের অর্থনীতিবিদ ছিলেন। ২০১০ সালে হাউস অব কমন্সের সদস্য হিসেবে প্রথম বক্তৃতায় তিনি কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির কথা বলেছিলেন। এসব কথা এখনো প্রাসঙ্গিক। এসব অঙ্গীকার করেই লেবার পার্টি নির্বাচনে জিতেছে।
সূত্র : বিবিসি

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us