সিআইটিআই রপ্তানি বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেনি, তবে দেশটির গণমাধ্যম দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন বলছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশে পোশাক খাতে অস্থিরতার কারণে ভারতে অর্ডার বাড়তে পারে। কারণ বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক। অর্থাৎ, পোশাকখাতের অস্থিরতায় সরাসরি লাভবান হচ্ছে ভারতসহ বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলো।
পোশাকখাতে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভারতের রপ্তানি বাড়ছে। বাংলাদেশে পোশাকখাত যখন শ্রম অস্থিরতায় ভুগছে, তখন চাঙ্গা হয়েছে প্রতিবেশী দেশের বস্ত্র (টেক্সটাইল) ও পোশাকের রপ্তানি। গেল অক্টোবরে ভারত টেক্সটাইল রপ্তানি করতে পেরেছে প্রায় ১৮৪ কোটি ডলারের, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি হয়েছে।
অক্টোবরে ভারতের পোশাকখাতেও শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির মুখ দেখেছে। অক্টোবরে যা ৩৫ দশমিক ০৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১২৩ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট শিল্পজোট – কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি (সিআইটিআই)।
ফলে আগের বছরের একই মাসের চেয়ে গত অক্টোবরে ভারতের পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের মোট রপ্তানি বেড়েছে ১৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর এপ্রিল-অক্টোবর সময়ে টেক্সটাইল রপ্তানিতে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ০১ শতাংশ। একই সময়ে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
সিআইটিআই প্রতিবেদনে বলেছে, ‘এসব অগ্রগতিতে আমরা উৎসাহবোধ করছি। বিশ্বস্তরে ভারতের পোশাক ও বস্ত্রখাতের প্রতিযোগী সক্ষমতা ও অদম্যতাকে তুলে ধরেছে এই ঘটনা।’
সিআইটিআই রপ্তানি বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেনি, তবে দেশটির গণমাধ্যম দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন বলছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশে পোশাক খাতে অস্থিরতার কারণে ভারতে অর্ডার বাড়তে পারে। কারণ বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক। অর্থাৎ, পোশাকখাতের অস্থিরতায় সরাসরি লাভবান হচ্ছে ভারতসহ বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলো।
এরমধ্যে ভারতের টেক্সটাইল শিল্প ফুলেফেঁপে উঠছে, যা আরও সম্প্রসারণের দুয়ারে রয়েছে বলে জানাচ্ছে বিজনেস লাইন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিনিয়োগ সংস্থা– ইনভেস্ট ইন্ডিয়ার তথ্যমতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশটির টেক্সটাইল খাত সাড়ে ৬ হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি শিল্পে পরিণত হবে। ভারতের টেক্সটাইল বাজারের আকার ২০২২ সালের মূল্যায়ন অনুযায়ী সাড়ে ১৬ হাজার কোটি ডলারের, এরমধ্যে অভ্যন্তরীণ বিক্রি থেকে সাড়ে ১২ হাজার কোটি ডলার ও রপ্তানি থেকে ৪ হাজার কোটি ডলার আয় করেছিল দেশটি। তবে বিভিন্ন পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, বার্ষিক গড় ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০৩০ সাল নাগাদ এই খাতের বাজার ৩৫ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে।
ইতোমধ্যেই ভারতে কর্মসংস্থানের বৃহৎ উৎসে পরিণত হয়েছে টেক্সটাইল শিল্প। বর্তমানে সাড়ে ৪ কোটি কর্মীর যেখানে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া টেক্সটাইল নির্ভর বা সংশ্লিষ্ট খাতগুলোয় জীবিকানির্বাহের সুযোগ তৈরি হয়েছে আরও ১০ কোটি মানুষের। টেক্সটাইল শিল্পের জন্য তুলা উৎপাদন করছেন ৬০ লাখ কৃষক, সেই তুলা প্রক্রিয়াজাত করা ও বিপণনের ব্যবসাতেও আরও অন্তত ৪-৫ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। (সূত্রঃ দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন