ভারতে চালের মজুদ চলতি মাসে রেকর্ড ২ কোটি ৯৭ লাখ টনে পৌঁছেছে, যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় তিন গুণ। ভারতে চালের মজুদ চলতি মাসে রেকর্ড ২ কোটি ৯৭ লাখ টনে পৌঁছেছে, যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় তিন গুণ। গত দুই বছর দেশটি থেকে চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এতে স্থানীয় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় মজুদ বেড়েছে। সম্প্রতি দেশটির সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অভ্যন্তরীণ সরবরাহের চিন্তা না করেই উচ্চ মজুদ ভারতকে রফতানি বাড়ানোর সুযোগ দেবে। গত বছর স্থানীয় মজুদ সীমিত থাকায় সব ধরনের চালের রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল দিল্লি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি গুদামগুলোয় চালের মজুদ চলতি মাসের শুরুতে ২ কোটি ৯৭ লাখ টনে পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ভারতের কৃষকরা চলতি বছরের গ্রীষ্ম মৌসুমে রেকর্ড ১২ কোটি টন চাল উৎপাদন করেছেন, যা দেশের মোট চাল উৎপাদনের প্রায় ৮৫ শতাংশ।
নতুন ধান বাজারে এলে ফুড করপোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এফসিআই) চালের মজুদ আসন্ন মাসগুলোয় আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল উৎপাদনকারী হিসেবে ভারতের জন্য মজুদ সংরক্ষণে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
এফসিআই গত ১ অক্টোবর শুরু হওয়া চলতি বিপণন বর্ষে গ্রীষ্ম মৌসুমে উৎপাদিত চাল থেকে প্রায় ৪ কোটি ৮৫ লাখ টন চাল ক্রয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষকদের কাছ থেকে ৪ কোটি ৬৩ লাখ টন চাল কেনা হয়েছিল।
উচ্চপদস্থ এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘চালের মজুদ যথেষ্ট বেশি এবং নতুন মৌসুমে বাম্পার ফলনের কারণে মজুদের পরিমাণ বাড়বে।’
চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন। গত বছর অপর্যাপ্ত মৌসুমি বৃষ্টির কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে ভারত চাল রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। তবে এ বছর দিল্লি সব ধরনের চাল রফতানির অনুমতি দিয়েছে। শুধু ১০০ শতাংশ ভাঙা চালের রফতানি নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে।
বিভি কৃষ্ণ রাও নামে এক রফতানিকারক বলেন, ‘রফতানি নিষেধাজ্ঞা অপসারণ আগামী মাসগুলোয় রফতানি ত্বরান্বিত এবং চাল কেনার জন্য সরকারের ওপর চাপ কমাবে।’
এদিকে ভারতের প্রধান চাল উৎপাদনকারী রাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, এফসিআই সংরক্ষণসংক্রান্ত সমস্যার কারণে নতুন মৌসুমের চাল ক্রয়ের গতি কমিয়ে দিয়েছে। এতে তারা পাইকারি বাজারে চাল বিক্রির জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। পাঞ্জাবের কৃষক রমনদীপ সিং মান বলেন, ‘পাইকারি বাজারে চালের মজুদ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’
কৃষিখাদ্য নীতি বিশেষজ্ঞ দেবিন্দর শর্মা বলেন, ‘পাইকারি বাজারে ক্রয়-বিক্রয় শুরু না হওয়ায় কিছু কৃষক তাদের ধানের ফসল কাটতে পারছেন না। ফসল কাটার সময়ও ফুরিয়ে আসছে।’
খবর : রয়টার্স।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন