ষোল শতাব্দীর মিং সাম্রাজ্যে তৈরি এক জোড়া মাছ রাখার পাত্র নিলামে সোয়া ১ কোটি ডলারে বিক্রি হয়েছে। এ নিলামের আয়োজন করেছিল সদবি’স। সংস্থাটি জানিয়েছে, এবারই প্রথম প্রদর্শনীতে উঠেছে বিরল পাত্র দুটি এবং প্রায় ২০ মিনিট ধরে ১০ জনের বেশি সংগ্রাহক হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। সবশেষে এশিয়ার এক সংগ্রাহক চূড়ান্ত দাম বলেন। তিনি ব্যক্তিগত ভাণ্ডারে রাখার জন্য পাত্রগুলো সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত নিলামে বিক্রীত চীনা শিল্পের মধ্যে পাত্র দুটি সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড গড়েছে বলেও জানিয়েছে সদবি’স। নিলামে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ অংশ ঢাকনাসহ এ ধরনের কোনো পাত্র প্রদর্শিত হয়েছে। আরেকটি অক্ষত সেট মিউজে গুইমেতে সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া তিনটি একক পাত্র ঢাকনাসহ ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে। সদবি’স জানিয়েছে, এ জোড়া পাত্র অন্তত এক শতাব্দী ধরে একটি জার্মান পরিবারের সংগ্রহে ছিল। এগুলো টিকে থাকাকে ‘এক ধরনের অলৌকিক ঘটনা’ বলা যায়। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়। তবে শিল্পকর্মসহ এ পাত্রগুলো নিরাপদে সরিয়ে নিতে পেরেছিল পরিবারটি। সোয়া ১ কোটি ডলারে বিক্রি হওয়া পাত্রগুলো জিয়াজিং সম্রাটের রাজত্বকালে (১৫২২-৬৬) তৈরি হয়েছিল, যা পোর্সেলিন শিল্পে দক্ষতার স্বাক্ষর বহন করছে। পাত্রগুলোয় পদ্ম ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদসহ পুকুরে সাঁতার কাটা সোনালি রঙের কার্প মাছের ছবি রয়েছে। নিলাম ঘর সদবি’স জানিয়েছে, মাছ আঁকার পেছনে দর্শনগত কারণ রয়েছে। সম্রাট জিয়াজিং ছিলেন নিষ্ঠাবান দাওবাদী। দাওবাদ হলো একটি চীনা দর্শন ও ধর্ম, যা প্রকৃতি ও পথের সামঞ্জস্যের ওপর জোর দেয়। এ দর্শনে মাছ হলো স্বাধীনতার প্রতীক। মাছকে উদ্বেগহীন, প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আনন্দময় জীবনের প্রতীক হিসেবে ধরা হতো। চীনে সিরামিকের গুরুত্ব সবসময়ই ছিল। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে সিরামিকের ঐতিহ্য থাকলেও চীনে সিরামিকের ইতিহাস হাজার হাজার বছরের। (খবর ও ছবিঃ সিএনএন)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন