এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ডাটা স্টোরেজ থেকে শুরু করে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন চালানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ চলছে একাধিক পাবলিক ক্লাউড সার্ভিসে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ডাটা স্টোরেজ থেকে শুরু করে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন চালানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ চলছে একাধিক পাবলিক ক্লাউড সার্ভিসে। তবে ক্লাউডবিষয়ক দক্ষতার অভাব ও কর্মক্ষমতা নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। এশিয়া-প্যাসিফিক স্টেট অব ক্লাউড শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, অনেক প্রতিষ্ঠান এখন হাইব্রিড ক্লাউড ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে, যেখানে পাবলিক ও প্রাইভেট ক্লাউড উভয়ই ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এ প্রবণতা দেখা যায় বেশি। সেখানকার ৮৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে যে তাদের কাজগুলো প্রকৃত হাইব্রিড ক্লাউড পরিবেশে রয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ৫২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান অন্তত একটি এজ-টু-ক্লাউড (স্থানীয় ডিভাইস ও দূরবর্তী ক্লাউড ব্যবহার করে ডাটা প্রক্রিয়া ও সংরক্ষণ) প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো জটিল অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ‘ডিস্ট্রিবিউটেড ক্লাউড আর্কিটেকচার’ ব্যবহার করে আরো স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। ডিস্ট্রিবিউটেড ক্লাউড আর্কিটেকচার একটি কম্পিউটিং সেটআপকে বোঝায়, যেখানে ক্লাউড রিসোর্স ও পরিষেবাগুলো এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হওয়ার পরিবর্তে একাধিক স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এ তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ক্লাউড কম্পিউটিংকে তাদের সামগ্রিক আইটি অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য হিসেবে বিবেচনা করছে।
আইডিসির ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং আইটি পরিষেবার সহযোগী গবেষণা পরিচালক পুষ্কর শানভাগ বলছেন, ‘যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তাই হাইব্রিড ক্লাউড আর্কিটেকচার খুবই প্রয়োজনীয়। প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাইভেট এআই ব্যবহার করতে হবে, যেন তারা ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের নিয়ম মেনে চলে এবং একই সঙ্গে পাবলিক ক্লাউডের সুবিধাও নিতে হবে। ডাটা ও এআই-বিষয়ক কাজের জন্য ভবিষ্যতে আরো বেশি প্রতিষ্ঠান ক্লাউড প্রযুক্তি গ্রহণ করবে।’
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ক্লাউড যাত্রা অর্থাৎ ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার শুরু ও সেটিকে তাদের কাজের মধ্যে যুক্ত করার প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের বিক্রেতাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখে। এর মধ্যে রয়েছে বড় ক্লাউড প্রদানকারী (হাইপারস্কেলার), হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারক (ইনফ্রাস্ট্রাকচার ওইএম), বিশেষায়িত ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারী, ব্যবসায়িক পরামর্শদাতা, সফটওয়্যার বিক্রেতা, ডাটা সেন্টার প্রদানকারী, টেলিকম কোম্পানি ও গ্লোবাল সিস্টেম ইন্টিগ্রেটর (জিএসআই)। এ বৈচিত্র্য বোঝায় যে অঞ্চলটির কোম্পানিগুলো ক্লাউড প্রযুক্তি গ্রহণ, ব্যবহার এবং সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন পন্থা ও কৌশল অনুসরণ করছে। তবে ক্লাউড যাত্রায় প্রতিষ্ঠানগুলো যে প্রধান চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, তার মধ্যে রয়েছে তাদের কর্মীদের মধ্যে পর্যাপ্ত ক্লাউড দক্ষতা না থাকা, সময়মতো পরিষেবা সরবরাহ করতে অসুবিধা। এছাড়া ক্লাউড যাত্রায় প্রধান সমস্যা হলো প্রত্যাশিত সুবিধা না পাওয়া। ফলে অতিরিক্ত খরচ, বিলম্ব ও একাধিক বিক্রেতা পরিচালনায় জটিলতা তৈরি হয়। শানভাগ বলছেন, কোম্পানিগুলো যখন তাদের ডিজিটাল অবকাঠামো ও ক্লাউড পরিষেবার পরিকল্পনা করে, তখন বিক্রেতাদের সামর্থ্য ও সক্ষমতার পরিসর মূল্যায়ন করা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন