জিপরিক্রুটারের তথ্য অনুযায়ী, এআই টিউটরদের বার্ষিক বেতন প্রায় ৩০ হাজার ডলার থেকে শুরু হয়, এবং পূর্ণকালীন এআই প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারদের আয় বছরে প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। বিলিয়নিয়াররাও সাইড হ্যাসেল (ছোটখাটো কাজ করে অর্থ উপার্জন) করতে ভালোবাসেন। সিএনবিসি’র মেক ইট-এ ধনকুবের মার্ক কিউবান বলেছেন, তিনি যদি আবার ১৬ বছর বয়সে ফিরে যেতেন এবং তার কিছু অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের প্রয়োজন হতো, তাহলে তিনি এআই ব্যবহার করে টুকটাক আয়ের চেষ্টা করতেন। এবং তা মাত্র ৩টি ধাপে করা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রথমে, তিনি শিখতেন ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি বা গুগলের জেমিনির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাংগুয়েজ মডেলের জন্য কীভাবে প্রম্পট বা নির্দেশনা লিখতে হয়। এরপর, তিনি তার বন্ধুদের শেখাতেন কীভাবে সেগুলো স্কুলের অ্যাসাইনমেন্টে ব্যবহার করতে হয়। ‘তারপর আমি ব্যবসায়ীদের কাছে যেতাম, বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়ীরা যারা এখনো এআই সম্পর্কে সচেতন নয়,’ বলেন কিউবান। ‘যদিও আমার বয়স ১৬ বছর, আমি তাদেরও শেখাতাম।’
লেন্ডিংট্রি’র ফেব্রুয়ারি মাসের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেশন জেড-এর অর্ধেকেরও বেশি তরুণ এখন সাইড হ্যাসেল (বাড়তি আয়ের জন্য কাজ) করছে।
এআই প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং—অর্থাৎ, চ্যাটবট থেকে কাঙ্ক্ষিত উত্তর পাওয়ার জন্য সঠিকভাবে প্রশ্ন তৈরি করার দক্ষতা; এটি বাড়তি আয়ের একটি বিশেষ লাভজনক সুযোগ হতে পারে।
জিপরিক্রুটারের তথ্য অনুযায়ী, এআই টিউটরদের বার্ষিক বেতন প্রায় ৩০ হাজার ডলার থেকে শুরু হয়, এবং পূর্ণকালীন এআই প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারদের আয় বছরে প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
এআই প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ার হতে কোনো কলেজ ডিগ্রি প্রয়োজন হয় না, তবে এআই মডেলগুলো কীভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য অনুশীলন এবং অনেক ক্ষেত্রেই সার্টিফিকেশন বা সনদপত্রের দরকার হয়। কিছু অনলাইন সার্টিফিকেশন কোর্স, যেমন ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি বা আইবিএম-এর কোর্সগুলো বলে যে, এক মাসের মধ্যেই প্রাথমিক বিষয়গুলো শেখা সম্ভব।
কিউবান মাত্র ১২ বছর বয়সে বাস্কেটবল জুতার জন্য অর্থ জমাতে পিটসবার্গের বাইরে তার প্রতিবেশীদের কাছে দরজায় দরজায় গিয়ে গার্বেজ ব্যাগ বিক্রি করতেন। এরপর কিশোর বয়সে তিনি বেসবল কার্ড, স্ট্যাম্প, এবং কয়েনের মতো সংগ্রহযোগ্য আইটেম বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করেন, যা পরে তাকে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য সহায়তা করে।
কলেজে পড়াকালে তিনি বারটেন্ডার হিসেবে কাজ করেছেন, পার্টির আয়োজন করে প্রবেশ ফি নিয়েছেন এবং এমনকি ডান্স ইন্সট্রাক্টর হিসেবেও কাজ করেছেন। কলেজের পরে কিছুদিন ব্যাংকিংয়ে কাজ করার পর কিউবান পূর্ণকালীন উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন। তিনি তার প্রথম কোম্পানি, সফটওয়্যার স্টার্টআপ ‘মাইক্রোসলিউশনস’ ১৯৯০ সালে কম্পুসার্ভ-এর কাছে ৬ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন। দ্বিতীয় কোম্পানি, অডিও স্ট্রিমিং সেবা প্ল্যাটফর্ম ‘ব্রডকাস্ট ডট কম’ ১৯৯৯ সালে ইয়াহুর কাছে ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে বিলিয়নিয়ারের দলে যোগ দেন। ফোর্বসের অনুমান অনুযায়ী, কিউবানের মোট সম্পদের পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। তিনি বর্তমানে তার অনলাইন ফার্মেসি ‘কোস্ট প্লাস ড্রাগস’ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, যা বিভিন্ন সাধারণ প্রেসক্রিপশন ওষুধকে আরও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
২০১৬ সালে এবিসি’র শার্ক ট্যাঙ্ক-এর একটি পর্বে কিউবান বলেন, ‘আমি সবসময়-ই একজন হ্যাসলার ছিলাম … আমি সবসময় কিছু না কিছু বিক্রি করতাম। আমার সবসময় কিছু না কিছু চলত। সেটাই ছিল আমার স্বভাব।’ (সূত্রঃ দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন