আইএমএফের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের ডিরেক্টর কৃষ্ণ শ্রীনিবাসন জানিয়েছেন, দীর্ঘ নির্বাচন প্রক্রিয়া সত্ত্বেও ভারতের অর্থ ব্যবস্থা শক্তপোক্ত। রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে। বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার ভাল জায়গায়।
ভাল বর্ষার প্রভাবে কৃষিফলনের উন্নতি এবং গ্রামাঞ্চলে খরচের ক্ষমতা বৃদ্ধির উপরে ভিত্তি করে ভারত দ্রুততম বৃদ্ধির বৃহৎ অর্থনীতির তকমা ধরে রাখতে পারবে বলে জানাল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)। আজ এক রিপোর্টে তাদের বক্তব্য, চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৭%। তবে কর্মসংস্থান বাড়াতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছে তারা। আর পরামর্শদাতা সংস্থা ডেলয়েট ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এ বছর ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৭%-৭.২%। এই অবস্থায় আয়ের বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য সংগঠিত ক্ষেত্রে যথেষ্ট সংখ্যায় ভাল মানের কাজ তৈরি করতে হবে। ঠিক যে কথা অতীতে বলেছেন কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। আজ আমেরিকা সফরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছেন, পরিকাঠামো, লগ্নি এবং উদ্ভাবনের মতো বিষয়গুলির উপরে জোর দিয়ে ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত উন্নত অর্থনীতি হয়ে উঠবে।
আইএমএফের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের ডিরেক্টর কৃষ্ণ শ্রীনিবাসন জানিয়েছেন, দীর্ঘ নির্বাচন প্রক্রিয়া সত্ত্বেও ভারতের অর্থ ব্যবস্থা শক্তপোক্ত। রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে। বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার ভাল জায়গায়। তবে কাজের বাজারের উন্নতির জন্য তিনটি ক্ষেত্রে সংস্কার জরুরি। শ্রীনিবাসন বলেন, ‘‘ভারতে বেশি সংখ্যায় কাজ তৈরি করা দরকার। আমার মতে, ২০১৯-২০ সালে পাশ হওয়া শ্রমবিধি কার্যকর করা উচিত। তাতে কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শ্রমের বাজার নমনীয় হবে।’’ সেই সঙ্গে শ্রম ক্ষেত্রের সংস্কার এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রের বেশ কিছু বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের কথা বলেছেন তিনি। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, কৃষকদের আন্দোলনের মুখে ওই ক্ষেত্রটির সংস্কার আটকে রয়েছে। আপাতত কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্র।
অন্য দিকে, ডেলয়েট ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ফের কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ভারতের উৎপাদন ক্ষেত্রের গতি বাড়ছে। আর আমেরিকার নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে তাদের ঋণনীতির সুফলও পাবে ভারত। মূলধনী বাজারে ঢুকবে পুঁজি, আসবে দীর্ঘমেয়াদি লগ্নি ও তৈরি হবে কাজ। এই সবের প্রভাবে ভারত দ্রুততম বৃদ্ধির বৃহৎ অর্থনীতির তকমা ধরে রাখতে পারবে। তবে একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্বে আর্থিক কর্মকাণ্ডঘুরে দাঁড়ানোটা একসঙ্গে হচ্ছে না। কোনও দেশে তা হচ্ছে দেরিতে। ভারতের রফতানিতে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ঠিক একই কারণে আগামী অর্থবর্ষে বৃদ্ধি কিছুটা ধাক্কা খাবে।’’ একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, পরিবারগুলির আয় বাড়তে গেলে তৈরি করতে হবে যথেষ্ট সংখ্যায় ভাল মানের কাজ। সংগঠিত ক্ষেত্রে তা করা সম্ভব হলে আয়ের বণ্টনও ভাল হবে। ভারত সেমিকনডাক্টর, বৈদ্যুতিন যন্ত্র এবং বিকল্প বিদ্যুতের মতো আধুনিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়ায় এমন প্রচুর কাজ তৈরি হবে বলে আশা তাদের।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন