দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত প্রতি ১০ বিদেশী শিক্ষার্থীর মধ্যে আটজনই দেশটিতে কাজ করতে আগ্রহী বলে তথ্য দিয়েছে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (কেআইটিএ)।
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত প্রতি ১০ বিদেশী শিক্ষার্থীর মধ্যে আটজনই দেশটিতে কাজ করতে আগ্রহী বলে তথ্য দিয়েছে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (কেআইটিএ)। তবে যোগ্য বিদেশীদের খুব কমই দেশটিতে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
সর্বশেষ এক দশকে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি আন্তর্জাতিক পরিসরে আগ্রহ বেড়েছে। ২০২২ সালে দেশটিতে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজারে পৌঁছায়। তবে এর মধ্যে ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী দেশটিতে দক্ষ পেশাদারদের জন্য প্রবর্তিত ই-৭-১ ভিসার আওতায় চাকরি নিশ্চিত করতে পেরেছেন। এ ভিসার অধীনে উচ্চ বেতনের টেকনোলজি ও আইটি খাতে নিয়োগ পাওয়া যায়।
স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৪৯৩ বিদেশী শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ পরিচালনা করে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে কেআইটিএ। সেখানে দেখা যাচ্ছে, স্নাতক শেষে ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী দেশটিতে কোনো কোম্পানিতে ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুক। তবে অর্ধেকের পছন্দ কোরিয়ান কোম্পানি।
জরিপে দেখা যায়, সব সময় বড় করপোরেশন বা সংস্থায় বিদেশী শিক্ষার্থীরা কাজ করতে চান এমন নয়। প্রতি চার উত্তরদাতার তিনজন বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বিবেচনায় রাজধানী সিউলের বাইরে যেতেও আগ্রহী, যা দেশটির ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর প্রতি বিদেশীদের ইতিবাচক মনোভঙ্গি তুলে ধরে।
স্থানীয় কোম্পানিগুলোও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতে আগ্রহী। জরিপে অংশ নেয়া চার শতাধিক কোম্পানির ৩৪ শতাংশ বিদেশী কর্মী নিয়োগ দিতে আগ্রহী। কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেছেন এমন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে কাজ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ৫১ শতাংশ। তবে যথাযথ তথ্য ও ভিসাগত কারণে প্রায়ই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতে পারে না স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।
২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে, ওই সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাস করতেন ২৫ লাখের মতো বিদেশী। তাদের মধ্যে ৯ লাখ ২০ হাজার স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। এ কর্মীদের বেশির ভাগ এসেছেন ই-৯-এর মতো অপেশাদার নিয়োগ ভিসায়। এর বিপরীতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পেয়ে থাকেন ই-৭-১ ভিসা, যা সংখ্যায় অত্যন্ত কম।
এদিকে কোরিয়ার চাকরির শূন্যপদে দক্ষ বিদেশী মেধাবীদের সুযোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন কেআইটিএর সিনিয়র গবেষক কিম ঘোট-বাইওল। এজন্য উন্নত কর্মসংস্থান ও কাজের পরিবেশ তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।
এ গবেষকের মতে, জার্মানি ও জাপানের মতো দেশকে অনুসরণ করতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া। উৎপাদন খাত পরিচালনা এবং বার্ধক্যজনিত কর্মী সংকটের সমস্যার সমাধানে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে সক্রিয়ভাবে নীতি বাস্তবায়ন করছে দেশগুলো।
কিম ঘোট-বাইওল জানান, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়োগে সামাজিক খরচ এবং অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমানো যাবে। এর জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিদেশী শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি, পদ্ধতিগতভাবে আত্তীকরণে ব্যাপক প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
সূত্র : কোরিয়া হেরাল্ড
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন