মিয়ানমারের জন্য সুসংবাদ হয়ে এসেছে ট্রাম্পের ট্যারিফ লেটার – The Finance BD
 ঢাকা     রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারের জন্য সুসংবাদ হয়ে এসেছে ট্রাম্পের ট্যারিফ লেটার

  • ১২/০৭/২০২৫

ট্রাম্পের এই চিঠিকে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ব্যাখ্যা করেছেন ‘মার্কিন অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের একটি উৎসাহব্যঞ্জক আমন্ত্রণ’ হিসেবে। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠানো যেতে পারে। বিশ্বের বেশিরভাগ নেতার জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ লেটার। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের জান্তাশাসক এটিকে দেখছেন তার সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রতীক হিসেবে। খবর সিএনএন। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানের মতো তাকেও চিঠি পাঠিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা মিয়ানমারের পণ্যের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আগামী ১ আগস্ট কার্যকরের ঘোষণা দেয়া হয়। তবে মিন অং বলছেন, বিষয়বস্তু যাই হোক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পাঠানো চিঠি পাওয়া তার জন্য সম্মানের বিষয়।
শুক্রবার দেশটির সরকারি গণমাধ্যম ‘গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ জানায়, সেনা সরকার চিঠিটি ‘আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করেছে’। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের সেনা সরকারকে বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি, সেখানে এই চিঠিকে তারা রাজনৈতিক স্বীকৃতির মতো ব্যবহার করছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। গণতন্ত্রপন্থি যোদ্ধা ও জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সেনাবাহিনীকে যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেনা সরকারকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সীমিত করেছে কূটনৈতিক সম্পর্ক। বর্তমানে ওয়াশিংটনসহ বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ মিয়ানমারে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রদূত পাঠানো বন্ধ রেখেছে। তবে ট্রাম্পের এই চিঠিকে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ব্যাখ্যা করেছেন ‘মার্কিন অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের একটি উৎসাহব্যঞ্জক আমন্ত্রণ’ হিসেবে। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠানো যেতে পারে।
এরই মধ্যে ফিরতি চিঠিও পাঠিয়েছেন মিন অং হ্লাইং। এতে মিয়ানমারের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেয়া বা শিথিলের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তার মতে, এসব নিষেধাজ্ঞা উভয় দেশের জনগণের ভাগ্য ও সমৃদ্ধির অন্তরায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ট্রাম্পের সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মনোভাব ও বিশ্বমঞ্চে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসনের রেডিও ফ্রি এশিয়া এবং ভয়েস অব আমেরিকার মতো মার্কিন সম্প্রচার সংস্থাগুলোর তহবিল হ্রাস করার সিদ্ধান্তের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সেনা সরকারের দমন পীড়নের সংবাদ প্রচার করে আসছিল। সবশেষে, মিন অং হ্লাইং ট্রাম্পের বহুবার খণ্ডন হওয়া ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির দাবির সঙ্গেও একাত্মতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ২০২০ সালের নির্বাচনে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন, ঠিক তেমনই মিয়ানমারেও ছিল নির্বাচনী জালিয়াতি ও গুরুতর অনিয়ম। তবে বাস্তবে, ২০২০ সালের নভেম্বরে হওয়া মিয়ানমারের সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে বেশিরভাগ পর্যবেক্ষকের কাছে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ছিল। ওই নির্বাচনে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সেনাবাহিনীর সমর্থিত দলকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। এই ফলাফল মেনে না নিয়ে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us