রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক রিজার্ভ। এর আকার জুন নাগাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার, যা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। তবে এ বিপুল সম্পদের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৩০ হাজার কোটি ডলারের বেশি ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলোয় ফ্রোজেন বা জব্দ অবস্থায় রয়েছে। মস্কোর অভিযোগ, রাশিয়ার এসব সম্পদ ‘অবৈধভাবে’ জব্দ করে রাখা হয়েছে। খবর আরটি। রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাপ্তাহিক হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, জুনের তৃতীয় সপ্তাহে দেশটির রিজার্ভ ৫০ কোটি ডলার বা দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে, যা আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ভাষায় ‘ইতিবাচক বাজার মূল্যায়নের’ ফল। গত এক মাসে রিজার্ভ বেড়েছে ৯০০ কোটি ডলার। আগের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক রিজার্ভ ছিল মে মাসের শুরুতে, যা ছিল ৬৮ হাজার ৭৩০ কোটি ডলার।
উল্লেখিত এ আন্তর্জাতিক রিজার্ভে বৈদেশিক মুদ্রা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (এসডিআর) ও স্বর্ণের মজুদ অন্তর্ভুক্ত। তবে রাশিয়ার জব্দ হওয়া রিজার্ভের কতটা ভাগ কোথায় রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০২২ সালের শুরুর দিকে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার প্রায় অর্ধেক আন্তর্জাতিক রিজার্ভ জব্দ করে। যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই রাখা হয়েছে ব্রাসেলসভিত্তিক ক্লিয়ারিং হাউজ ইউরোক্লিয়ারে। এরই মধ্যে তাতে যোগ হয়েছে বিলিয়ন ইউরো সুদ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা সুদ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ইউক্রেনকে সহায়তায় ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন। জি৭-এর ৫ হাজার কোটি ডলারের ঋণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত বছর ইউরোক্লিয়ার ১৭০ কোটি ডলার বা ১৫০ ইউরো সুদ বাবদ আয় ইউক্রেনকে হস্তান্তর করে। ঋণের ১ হাজার ৮১০ কোটি ইউরো দিচ্ছে ইউরোপিয়ান কমিশন। এর মধ্যে ৭০০ কোটি ইউরো এরই মধ্যে ইউক্রেনকে দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে রাশিয়ার জব্দ সম্পদ থেকে পাওয়া সুদ দিয়ে এ ঋণ পরিশোধ করা হবে। ইউরোপীয় কমিশন উচ্চ সুদযুক্ত খাতে এ জব্দ সম্পদ বিনিয়োগের নতুন পরিকল্পনাও বিবেচনা করছে। তবে মূলধন সরাসরি বাজেয়াপ্ত না করেই আয় বাড়ানোর এ উদ্যোগ জার্মানি ও ইতালি আইনি ও আর্থিক ঝুঁকির কারণে বিরোধিতা করছে। রাশিয়া বলছে, এভাবে সম্পদ জব্দ করাকে ‘চুরি বললেও কম বলা হয়’। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষ্যমতে, এটি ‘ডাকাতি’ এবং এ ধরনের পদক্ষেপের জবাবে রাশিয়া পশ্চিমা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে আঞ্চলিক লেনদেন ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকবে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন