চার বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে গুগলের ডাটা সেন্টারের বিদ্যুৎ খরচ – The Finance BD
 ঢাকা     রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

চার বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে গুগলের ডাটা সেন্টারের বিদ্যুৎ খরচ

  • ০৩/০৭/২০২৫

টেক জায়ান্ট গুগলের বিদ্যুৎ ব্যবহার কয়েক বছর ধরে ব্যাপকভাবে বাড়ছে। কোম্পানিটির ক্রমবর্ধমান এ চাহিদার প্রায় পুরোটাজুড়েই রয়েছে গুগলের ডাটা সেন্টারগুলোর ভূমিকা। চার বছরে কোম্পানিটির সব ডাটা সেন্টারের বিদ্যুৎ ব্যবহার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। কোম্পানির সাম্প্রতিক পরিবেশবিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। খবর টেকক্রাঞ্চ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে গুগলের ডাটা সেন্টারগুলোয় ব্যবহার হয়েছে প্রায় ৩১ মিলিয়ন মেগাওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ। বিপরীতে ২০২০ সালে সে পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন মেগাওয়াট-ঘণ্টা। অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। গুগলের সার্চ ইঞ্জিন, ইউটিউব, জিমেইল ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) বিভিন্ন সেবা পরিচালনার জন্য বিশাল আকারের ডাটা সেন্টারগুলো দিনরাত কাজ করে। এসব কেন্দ্রে থাকা লক্ষ লক্ষ সার্ভার চালু রাখতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এআই ও ক্লাউড সেবার চাহিদা পূরণে বিপুল পরিমাণ কম্পিউটিং শক্তি ব্যবহার করছে গুগলসহ অন্যান্য কোম্পানি। ফলে দ্রুত বাড়ছে বিদ্যুৎ চাহিদা ও কার্বন নিঃসরণও।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর গুগলের মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারের ৯৫ শতাংশের বেশি খরচ হয়েছে ডাটা সেন্টার চালাতে। চার বছর ধরে এ অনুপাত প্রায় একই রয়েছে। গুগল ২০২০ সাল থেকে বিস্তারিতভাবে ডাটা সেন্টারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করে। আগের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালে এ খাতে ব্যবহার হয়েছিল আনুমানিক ৪ মিলিয়নের একটু বেশি মেগাওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ। অর্থাৎ এক দশকে গুগলের ডাটা সেন্টারের বিদ্যুৎ ব্যবহার সাত গুণ বেড়ে গেছে। এদিকে ডাটা সেন্টারের বিদ্যুৎ ব্যবহার আরো দক্ষ করে তুলতে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে গুগল। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিনিয়োগও বাড়াচ্ছে কোম্পানিটি। প্রতিষ্ঠানটি তাদের কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যাপকভাবে জিওথার্মাল, পারমাণবিক ফিশন ও ফিউশন প্রযুক্তি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অর্থ ব্যয় করছে।
গত বছর গুগল বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। মে মাসে কোম্পানিটি দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ৬০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কিনেছে এবং জানুয়ারিতে ওকলাহোমায় ৭০০ মেগাওয়াটের একটি চুক্তি করে। ইন্টারসেক্ট পাওয়ার ও টিপিজি রাইজ ক্লাইমেপের সঙ্গে যৌথভাবে গুগল কয়েক গিগাওয়াট সক্ষমতার কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে, যার মোট বিনিয়োগ ২ হাজার কোটি ডলার। এছাড়া বার্ষিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের সমপরিমাণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি কেনার চুক্তি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সবসময় ও সব জায়গায় এ বিদ্যুৎ প্রয়োজনমতো সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গুগল বর্তমানে ডাটা সেন্টারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ কার্বনমুক্ত উৎস থেকে পায়। যদিও অঞ্চলভেদে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। লাতিন আমেরিকায় গুগলের বেশির ভাগ ডাটা সেন্টার কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারলেও মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় সে সংখ্যা সামান্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহারের পাশাপাশি কয়েক বছরে গুগলের কার্বন নিঃসরণও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির মোট কার্বন নিঃসরণ ৫১ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই নিঃসরণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সাপ্লাই চেইন সম্পর্কিত স্কোপ-৩ নিঃসরণ, যা এক বছরে ২২ শতাংশ বেড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চাহিদা দ্রুত বাড়ায় বিদ্যুৎ ব্যবহারে বড় ধরনের চাপ পড়েছে গুগলের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর ওপর। ফলে পরিবেশবান্ধব হওয়ার প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানগুলর কার্বন নিঃসরণ ও বিদ্যুৎ ব্যবহার বেড়েই চলছে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us