সৌদি আরবে দাফন করা হবে নাইজেরিয়ার অন্যতম শীর্ষ ধনী আমিনু দন্তাতাকে – The Finance BD
 ঢাকা     শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

সৌদি আরবে দাফন করা হবে নাইজেরিয়ার অন্যতম শীর্ষ ধনী আমিনু দন্তাতাকে

  • ০১/০৭/২০২৫

দন্তাতা ছিলেন আফ্রিকার শীর্ষ ধনী আলিকো ড্যাংগোটের চাচা। মৃত্যুকালে তিনি [দন্তাতা] রেখে গেছেন তিন স্ত্রী, ২১ সন্তান ও ১২১ নাতি-নাতনি।
নাইজেরিয়ার শীর্ষ ধনী ব্যবসায়ীদের একজন, আমিনু দন্তাতা, শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। মৃত্যুর পর তার মরদেহ আবুধাবি থেকে সৌদি আরবের মদিনায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেখানে তাকে দাফন করা হবে। খবর বিবিসির। সৌদি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে তার মদিনায় দাফনের অনুমতি দিয়েছে। দন্তাতার ইচ্ছা ছিল, প্রিয় শহর মদিনায়—যেখানে ইসলাম ধর্মের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জীবনের শেষ সময় কাটিয়েছিলেন—সেখানেই যেন তার দাফন হয়। নাইজেরিয়ার তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ ইদ্রিস বিবিসিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দাফন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে নাইজেরিয়ার দূতাবাস ও দন্তাতার পরিবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পন্ন করার কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
দন্তাতা ছিলেন আফ্রিকার শীর্ষ ধনী আলিকো ড্যাংগোটের চাচা। মৃত্যুকালে তিনি [দন্তাতা] রেখে গেছেন তিন স্ত্রী, ২১ সন্তান ও ১২১ নাতি-নাতনি।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু দন্তাতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এটি জাতির জন্য একটি বিরাট ক্ষতি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তার অবদান ছিল অসামান্য। ব্যবসা, জনসেবা ও দানশীলতায় তিনি ছিলেন উদাহরণ।’ দেশজুড়ে তিনি পরিচিত ছিলেন একজন উদার দানশীল ব্যক্তি হিসেবে। গত বছর উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার বর্ণো রাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তিনি প্রায় ১৫০ কোটি নাইরা (৯৭ লাখ ডলার) দান করেছিলেন। তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিস্তৃত ছিল কৃষি, রিয়েল এস্টেট, নির্মাণ ও উৎপাদন খাতে। ১৯৪০-এর দশকে তিনি কলা বাদাম ও চিনাবাদাম বিক্রি করে ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু করেন। দন্তাতা এক বণিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আলহাসান দন্তাতা এক সময় পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
অবাক করার মতো বিষয় হলো, বিপুল সম্পদের মালিক হয়েও আমিনু দন্তাতা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কানো’র দরিদ্র এলাকাতেই বসবাস করেছেন, যেখানেই তার জন্ম।
রাজনৈতিক অঙ্গনেও ছিল তার ব্যাপক প্রভাব। নির্বাচনের আগে নেতারা তার দোয়া ও সমর্থন নিতে ছুটে যেতেন। ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট টিনুবুর তার প্রতি সম্মান জানিয়ে মাথা নিচু করে সালাম দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। তার মৃত্যুতে কানো শহরে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি আরবে তার জানাজায় অংশ নিতে নাইজেরিয়ার দুই রাজ্যপাল ও চারজন মন্ত্রী ইতোমধ্যে মদিনায় পৌঁছেছেন। দন্তাতা প্রাথমিকভাবে ইসলামি শিক্ষা অর্জন করেন এবং পরে কানোতে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুলে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। ট্রাস্ট টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের পরিবারে শিশুরা ৫, ৬ বা ৭ বছর বয়স থেকেই রোজগার করতে শেখে। স্কুলের ছুটিতে বাবা আমাদের ব্যবসা শেখাতেন। তিনি বলতেন—গাধায় করে যেভাবে লোকজন চিনাবাদাম আনে, তোমরা সে পদ্ধতিও শিখো।’ মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি পুরোদমে ব্যবসায় নেমে পড়েন এবং ১৯৫০-এর দশকে ভাই আহমাদু দন্তাতার স্থলাভিষিক্ত হয়ে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us