নিকেল উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে সমুদ্রের আমাজন – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন

নিকেল উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে সমুদ্রের আমাজন

  • ৩০/০৬/২০২৫

২০২৩ সালে বিশ্বে উৎপাদিত নিকেলের ৫২ শতাংশ এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার পূর্বাভাস—২০৩০ সালের মধ্যে এ হার হবে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। চীন, কোরিয়া ও অন্যান্য দেশের বড় বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এই শিল্পে লাখ লাখ ডলার ঢেলেছে। কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনা হচ্ছে। আর এ কারণেই ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইলেকট্রিক ভেহিকল বা বিদ্যুচ্চালিত যানবাহন। এই বাহনগুলোর ব্যাটারি তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় নিকেল।
বিশ্বের বৈদ্যুতিক যানবাহন শিল্পের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত ধাতব উপাদানটি ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির নিকেল মজুদ পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ। টেসলা, ভক্সওয়াগন, ফোর্ডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানি এ খনিজ সরবরাহে আগ্রহী।
২০২৩ সালে বিশ্বে উৎপাদিত নিকেলের ৫২ শতাংশ এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার পূর্বাভাস—২০৩০ সালের মধ্যে এই হার হবে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। চীন, কোরিয়া ও অন্যান্য দেশের বড় বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এ শিল্পে লাখ লাখ ডলার ঢেলেছে। আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে সমুদ্রের আমাজন খ্যাত ইন্দোনেশিয়ান পাপুয়া প্রদেশের রাজধানী রাজা আমপাটকে। ২০২৩ সালে ইউনেস্কো রাজা আমপাটকে ‘জিওপার্ক’ মর্যাদা দেয়। এরই মধ্যে এর ২০ লাখ হেক্টরের বেশি সামুদ্রিক অঞ্চল সংরক্ষিত। কিন্তু অঞ্চলটির অন্তত তিনটি দ্বীপে চলছে নিকেল খনন। আরো একটি দ্বীপে খননের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
নিকেল উত্তোলনের উদ্দেশ্যে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অঞ্চলটিতে খনন করা হয়েছে ৫০০ হেক্টরের বেশি জমি। আয়তনে যা প্রায় ৭০০টি ফুটবল মাঠের সমান। এতে কমে যাচ্ছে কৃষিজমি, ধ্বংস হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বনাঞ্চল। খনির আশপাশে ঘাঁটি নির্মাণ, পথ নির্মাণ, জ্বালানির জোগানসহ নানান কারণে এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজার হেক্টর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন। ইন্দোনেশিয়ার সরকার ২০২০ সালে কাঁচা নিকেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। দেশেই পরিশোধনের নির্দেশ দেয়। ফলে দেশে গড়ে উঠেছে বিশাল শিল্পপার্ক, যেখানে কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে চালানো হয় স্মেল্টার ও পরিশোধন কেন্দ্র। গ্লোবাল উইটনেসের তথ্য বলছে, এ খনিগুলোর স্মেল্টারে ব্যবহৃত কয়লা শুধু স্থানীয় পরিবেশকেই নয়, ইন্দোনেশিয়ার সামগ্রিক কার্বন নিঃসরণও বাড়িয়ে তুলছে। সেই সঙ্গে আরোহিত নিকেল বাতাস ও পানির উৎস দূষিত করছে। বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখানকার প্রবাল প্রাচীর ও সামুদ্রিক পরিবেশ। ভূমির উপরিভাগ সরিয়ে ফেলায় মাটি ও বর্জ্য জমে রঙিন প্রবালের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us