যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যচুক্তি সই, বিরল খনিজ রপ্তানি শুরু করবে বেইজিং – The Finance BD
 ঢাকা     রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০১:২২ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যচুক্তি সই, বিরল খনিজ রপ্তানি শুরু করবে বেইজিং

  • ২৮/০৬/২০২৫

দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পর অবশেষে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যচুক্তিতে সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা কিছুদিন আগেই চীনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি।” যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি, তবে মার্কিন প্রশাসনের সূত্র ও চীনা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, এটি ‘জেনেভা চুক্তি’-এর ধারাবাহিকতায় একটি অতিরিক্ত সমঝোতা, যার মূল লক্ষ্য চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান। শনিবার (২৮ জুন) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত মাসে অনুষ্ঠিত আলোচনার ফলাফল অনুসারে উভয় পক্ষই ৯০ দিনের জন্য পারস্পরিক শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। এই আলোচনার ভিত্তিতেই লন্ডনে চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণ করা হয় এবং সর্বশেষ চুক্তিটি তারই আনুষ্ঠানিক রূপ। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে জানান, চুক্তিটি দুই দিন আগেই স্বাক্ষরিত হয়েছে, যদিও তিনিও এর বিস্তারিত তুলে ধরেননি। গতকাল শুক্রবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে বলা হয়, যেসব পণ্য রপ্তানিতে আগে নিয়ন্ত্রণ ছিল, এখন সেগুলোর ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনুমোদন দেওয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও জানান, লন্ডন বৈঠকের পর থেকে দুই দেশ নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে এবং চূড়ান্ত কাঠামোতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে। চীন এ চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ ও চুম্বক সরবরাহ পুনরায় শুরু করবে। এই চুক্তির বিনিময়ে চীনা শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুনরায় ভর্তি ও পড়াশোনার সুযোগ পাবেন—এমনটিই জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। চীন গাড়ি, মহাকাশ, সেমিকন্ডাক্টর ও সামরিক খাতে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও চুম্বকের রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনও চীনের বিরুদ্ধে উন্নত প্রযুক্তিপণ্যের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে সব সমস্যার সমাধান না করলেও এটি একটি কৌশলগত ‘ডি-এসকেলেশন’। বিশ্বজুড়ে খনিজ সরবরাহ স্থিতিশীল করা এবং প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনও পুরো চুক্তির সব তথ্য প্রকাশ না করলেও, বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন—এই সমঝোতা কেবল বাণিজ্যিক নয়, শিক্ষা, প্রযুক্তি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা খাতে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারত্বের নতুন ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে।

 

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us