সুদহার কমানোর মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল। সে পরিপ্রেক্ষিতে আগামী মাসেও অপরিবর্তিত থাকতে পারে সুদহার। কংগ্রেসে দেয়া বক্তব্যে জেরোম পাওয়েল বলেন, ‘নীতিগত পরিবর্তন এখনো চলমান। অর্থনীতিতে এসব পরিবর্তনের কী ধরনের প্রভাব পড়ছে তা এখনো নিশ্চিত নই। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক গতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ খবর সিএনএন।
এমন সময় জেরোম পাওয়েল মন্তব্য করেছেন যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফেডের কিছু কর্মকর্তা সুদহার কমানোর পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে ফেড চেয়ারম্যানের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে। তবে সে প্রভাবের পরিধি এখনো অস্পষ্ট। তার মতে, ‘এককালীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর শুল্কের প্রভাব হয়তো স্বল্পমেয়াদি হবে। এ প্রভাব দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে। তবে বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধির ঢেউ সাধারণ ভোক্তাদের ওপর এসে পড়বে।’
কিছু কর্মকর্তা শুল্কজনিত মূল্যস্ফীতিকে অস্থায়ী বলে মন্তব্য করলেও অতীত অভিজ্ঞতা বলে মূল্যবৃদ্ধি সবসময়ই একই প্রবণতা ধারণ করে না। কভিড-১৯-এর সময় ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি পরে দীর্ঘস্থায়ী হয়। গত জানুয়ারি থেকে ফেড সুদহার ৪ দশমিক ২৫ থেকে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সীমায় অপরিবর্তিত রেখেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন কী ধরনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করে, সে তথ্য দৃশ্যমান হলেই শুধু সুদহার কমানোর প্রশ্ন বিবেচনা করতে চাইছেন ফেডসংশ্লিষ্টরা। এর আগে গত বছর পূর্ণ শতাংশীয় হারে সুদহার কমানো হয়, যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দুই দশকের সর্বোচ্চ স্তরে ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক ধীর প্রবৃদ্ধির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত সরাসরি প্রভাবের প্রমাণ নেই। তবে অধিকাংশ বিশ্লেষক মনে করছেন, শিগগিরই পরিস্থিতি বদলাবে। জেপি মরগ্যানের অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গ্রীষ্মের শেষ ভাগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের সর্বোচ্চ প্রভাব দেখা যাবে। জেরোম পাওয়েল কংগ্রেসে জানান, ফেড কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণ ও মডেল তৈরি করেছেন। যার মাধ্যমে দাম ও কর্মসংস্থানের ওপর শুল্কের স্বল্পমেয়াদি প্রভাব কীভাবে পড়বে তা বোঝা যাবে। ফেড চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুল্কনীতি বিষয়ে মন্তব্য আমাদের এখতিয়ারবহির্ভূত। আমাদের কাজ মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা ও পূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। ট্রাম্পের নীতি দুই লক্ষ্যের ওপরই প্রভাব ফেলে।’
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন