ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও ৩৬ দেশ যুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০৫:০৪ অপরাহ্ন

ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও ৩৬ দেশ যুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন

  • ১৬/০৬/২০২৫

নতুন তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ২৫টি আফ্রিকান দেশ, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মিশর ও জিবুতিও রয়েছে। এছাড়া ক্যারিবীয়, মধ্য এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ অঞ্চলের কয়েকটি দেশ রয়েছে এই তালিকায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে আরও ৩৬টি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে, যা চলতি মাসের শুরুতে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার বড়সড় সম্প্রসারণ হতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্মারকলিপির উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর জানিয়েছে। নতুন তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ২৫টি আফ্রিকান দেশ, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মিশর ও জিবুতিও রয়েছে। এছাড়া ক্যারিবীয়, মধ্য এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ অঞ্চলের কয়েকটি দেশ রয়েছে এই তালিকায়।

পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র জানান, অভ্যন্তরীণ আলোচনা নিয়ে তারা মন্তব্য করবেন না। হোয়াইট হাউসও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে এটি অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের আরেকটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। স্মারকলিপিটি শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর স্বাক্ষরে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মার্কিন কূটনীতিকদের কাছে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, এসব দেশকে পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্ধারিত নতুন মানদণ্ড পূরণে ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের একটি প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কিছু দেশে কার্যকর কেন্দ্রীয় সরকার না থাকায় নির্ভরযোগ্য নাগরিক নথি পাওয়া যায় না, আবার কোনো কোনো দেশে ব্যাপক সরকারি দুর্নীতি রয়েছে। কিছু দেশের বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও অবস্থান করছেন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে কিছু দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ইহুদি বিদ্বেষী ও আমেরিকাবিরোধী কার্যকলাপ’-এর অভিযোগও তোলা হয়েছে। তবে কোনো দেশ যদি তৃতীয় দেশের নাগরিকদের গ্রহণ করতে বা ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশ’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যেতে পারে। তবে, এসব শর্ত পূরণ না করলে কখন থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। স্মারকলিপিতে যেসব দেশের নাম রয়েছে: অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, ভূটান, বুরকিনা ফাসো, কাবো ভার্দে, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কঙ্গো (ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক), জিবুতি, ডোমিনিকা, ইথিওপিয়া, মিশর, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ঘানা, আইভরি কোস্ট, কিরগিজস্তান, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোম ও প্রিন্সিপে, সেনেগাল, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, তাঞ্জানিয়া, টোঙ্গা, টুভালু, উগান্ডা, বনুয়াতু, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।

এই তালিকা ৪ জুন জারিকৃত একটি প্রেসিডেনশিয়াল ঘোষণার বড় পরিসরের সম্প্রসারণ, যার অধীনে আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো (রিপাবলিক), ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়। একই ঘোষণার অধীনে বরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলার ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই ধরনের উদ্যোগকে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা ও সমালোচকরা জাতিগত বৈষম্যমূলক ও বিদেশিবিদ্বেষী বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রথম মেয়াদে মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং এবার আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের বহু দেশকে লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টি তার উদাহরণ বলে মনে করছেন তারা। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ইরান, ইরাক, সিরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন ও লিবিয়া থেকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করেন। সেসময় ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপকেআলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি করে এবং সিদ্ধান্তটি একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। পরে ২০১৮ সালের জুনে সুপ্রিম কোর্ট তৃতীয় সংস্করণটি বৈধ ঘোষণা করে।

বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার করা হলেও ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে বারবার বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি এটি ‘আরও বড় আকারে’ [ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা] আরোপ করবেন। জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউস একটি নির্বাহী আদেশে পররাষ্ট্র দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়, এমন দেশগুলো চিহ্নিত করতে যেগুলোর নাগরিকদের তথ্য যাচাই ও পর্দার আড়ালে মূল্যায়ন যথেষ্ট নয় এবং যাদের প্রবেশ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে স্থগিত রাখা যেতে পারে।

 

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us