বিশ্বের মোট মিলিয়নেয়ার ও বিলিয়নেয়ারের এক-তৃতীয়াংশের বেশি বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ খাতে প্রবৃদ্ধির বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে। মূলত হালনাগাদ এসব ব্যবসায়িক উদ্যোগের সুবিধা কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদশালীর সংখ্যা বাড়ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পরামর্শক সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স ও নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ। একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ধনী দেশটিতে অভিবাসনের মাধ্যমে থিতু হচ্ছেন। খবর সিএনবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ লাখের বেশি ‘লিকুইড মিলিয়নেয়ার’ রয়েছে। সাধারণত যাদের বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ ডলারের বেশি তাদের লিকুইড মিলিয়নেয়ার বলা হয়। গত এক দশকে দেশটিতে এ ধরনের সম্পদশালী বেড়েছে ৭৮ শতাংশ। তারা বৈশ্বিক মিলিয়নেয়ারের ৩৭ শতাংশ বা এক-তৃতীয়াংশের বেশি।
১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বলা হয় সেন্টিমিলিয়নেয়ার। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টিমিলিয়নেয়ার ছিলেন ১০ হাজার ৮৩৫ জন, যা দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীনের তুলনায় চার গুণেরও বেশি। এছাড়া ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার সম্পদ রয়েছে ৮৬৭ মার্কিনের, যা কিনা বিশ্বের মোট বিলিয়নেয়ারের এক-তৃতীয়াংশ। মার্কিনদের সম্পদ অর্জনে অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখছে প্রযুক্তি খাত। সাম্প্রতিক এ প্রবণতা সম্পর্কে নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথের গবেষণা প্রধান অ্যান্ড্রু অ্যামোয়েলস বলেন, ‘সফটওয়্যার, মাইক্রোচিপ, অনলাইন খুচরা বিক্রি, ইন্টারনেট হোস্টিং, সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো উচ্চগতির প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের নিঃসন্দেহ নেতৃস্থানীয় দেশ।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্ব থেকে ৩ হাজার ৮০০ সম্পদশালী ব্যক্তি অভিবাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নিয়েছে। যাদের মধ্যে ৯৫ জন ছিলেন সেন্টিমিলিয়নেয়ার। অভিবাসী কোটিপতিরা মূলত ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা ও টেক্সাসকে বেছে নিয়েছেন। এর মধ্যে প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া। মার্কিন ধনীদের বসবাসের জন্য পরিচিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্ক, বে এরিয়া ও লস অ্যাঞ্জেলেস। এসব অঞ্চল এখনো সবচেয়ে বেশি কোটিপতির আবাসস্থল। প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যারিজোনার স্কটসডেল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল সম্পদশালীদের শহর। গত এক দশকে এখানে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ১২৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৮০০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফ্লোরিয়ার ওয়েস্ট পাম বিচে ১১২ শতাংশ বেড়ে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫০০। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বে এরিয়া ও মায়ামি। সম্পদশালী বৃদ্ধির দৌড়ে দিন দিন ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে বে এরিয়া ও নিউইয়র্ক। বর্তমানে নিউইয়র্কে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০, যা বে এরিয়ার ৩ লাখ ৪২ হাজার ৪০০-এর তুলনায় কিছুটা বেশি। গত এক দশকে বে এরিয়ায় সম্পদশালী বেড়েছে ৯৮ শতাংশ, একই সময়ে নিউইয়র্কে বৃদ্ধির হার ৪৫ শতাংশ।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন