চীনের শ্লথ অর্থনীতি ও মূল্যহ্রাসের প্রতিযোগিতায় প্রভাবিত হচ্ছে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো। তারা এখন খরচ ও বিনিয়োগ কমার পথে হাঁটছে বলে সাম্প্রতিক এক বার্ষিক জরিপে উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে ইউরোপীয় কোম্পানির সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো দেশটির সামগ্রিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিফলন। বেইজিং দীর্ঘমেয়াদে রিয়েল এস্টেট খাতের পতনে ভুগছে। ভোক্তা ব্যয়ের ওপর এর প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে চীন যখন দেশীয় চাহিদার ঘাটতি পুষিয়ে নিতে রফতানি বাড়াচ্ছে, তখন ইউরোপ ও আমেরিকা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছে, চীনা পণ্য স্থানীয় শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ফলে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বা বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা আরোপ হয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেম্বার অব কমার্স ইন চায়নার ‘বিজনেস কনফিডেন্স সার্ভে ২০২৫’ শিরোনামের জরিপটি বলেছে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সূচকে চীনে বিনিয়োগ পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।
সেখানে বলা হয়, অর্থনৈতিক যে প্রবণতা চীনা পণ্যে রফতানি বাড়াচ্ছে, সেই একই বিষয় চীনা বাজারে ব্যবসার সম্ভাবনাকে নিরুৎসাহিত করছে। প্রায়ই সরকারি ভর্তুকির প্রলোভনে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির (ইভি) মতো নির্দিষ্ট খাতে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে চীনা কোম্পানিগুলো। এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে চাহিদার তুলনায় দেশটির কারখানায় উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি। এ অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা মূল্যহ্রাসের তীব্র প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেছে, যা মুনাফার পরিমাণ কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি চীনা কোম্পানিগুলোকে বিদেশী বাজারে প্রবেশে বাধ্য করেছে। ফলে ইউরোপে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে চীন থেকে ক্রমবর্ধমান আমদানি অঞ্চলটির নিজস্ব কারখানা ও কর্মীদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত বছর চীনা ইভির ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল। তখন অভিযোগ করা হয়েছিল, চীন ইভি উৎপাদনে অন্যায্য ভর্তুকি দিয়েছে। গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান চেম্বারের সভাপতি জেনস এস্কেলুন্ড বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক থেকে যে উপকার পাওয়া যাচ্ছে, তা ন্যায্যভাবে ভাগাভাগি হচ্ছে না।’ তিনি ভোক্তা ব্যয় বাড়ানোর জন্য চীনের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। সঙ্গে এও বলেন, সরকারের উচিত এমন ব্যবস্থা নেয়া যাতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহের প্রবৃদ্ধি বেশি না হয়। ৫০০টির মতো কোম্পানি জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় এ জরিপে অংশ নিয়েছিল। যেখানে দেখা যাচ্ছে, গত বছর চীনে মুনাফার ওপর চাপ আরো বেড়েছে এবং ব্যবসায়িক আস্থার পতন এখনো থামেনি।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন